১৪ বছরের আওয়ামী লীগের পরিসংখ্যান, কেমন ছিল বিএনপি আমল

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ দুপুর ১২:০৩, মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০২৩, ২৯ ফাল্গুন ১৪২৯

দেশের বৃহত্তম ও সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ২০২৩ সালের ৬ জানুয়ারি ১৪ বছরে পা দিয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা সরকার পদার্পন করছে পঞ্চম বছরে। দীর্ঘ ও টানা ক্ষমতায় থাকা এই ঐতিহ্যবাহী দলটি বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই ১৪ বছরে দলটি বাংলাদেশকে একটি দূর্বল অর্থনৈতিক দেশ থেকে সব শর্ত পূরণ করে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পদার্পন করিয়েছে। আর তা করতে গিয়ে মানুষের জীবনমানকে উন্নত করতে হয়েছে, আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হয়েছে। বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

 

গত ১৩ মার্চ গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিগত ১৪ বছরের আওয়ামী লীগের আমলনামা তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সাথে উল্লেখ করেছেন বিএনপি শাসনামলের পরিসংখ্যানের চিত্রও।

প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্যনুযায়ী বিএনপি-জামায়াত আমলের সঙ্গে ২০২২ এর বাংলাদেশের তুলনামূলক পার্থক্য তথ্য তুলে ধরা হলো:

অর্থনীতি :

১. বিএনপির শাসনামল ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশে প্রবৃদ্ধি ছিল ৫.৪০ শতাংশ, ২০২২ সাল শেষে আওয়ামীলীগ সরকারের প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ৭.৫০ শতাংশ।

২. ২০০৬ সালে মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার, বিগত সময়ে ৫ গুণ বেড়ে ২০২২ সালে মাথাপিছু আয় দাঁড়ায় ২৮২৪ মার্কিন ডলার।

৩. ২০০৬ সালে দেশের সার্বিক বাজেট ছিল ৬১ হাজার কোটি টাকা। আর ২০২২ সালে ১০ গুণ বেড়ে বাজেট দাঁড়ায় ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।

৪. ২০০৬ সালে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ০ দশমিক ৭৪৪ বিলিয়ন ডলার। ৩৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২২ সালে হয়েছে ৩২ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

৫. ২০০৬ সালে রপ্তানি আয় ছিল ১০.০৫ বিলিয়ন ডলার। ৫ গুণ বেড়ে ২০২২-এ তা ৫২ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়ায়।

৬. ২০০৬ সালে রেমিট্যান্স ছিল ৪.৮ বিলিয়ন ডলার আর ২০২২-এ ৫ গুণ বেড়ে ২১.০৩ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

৭. ২০০৬ সালে সামাজিক নিরাপত্তাখাতে বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা। ৪০ গুণ বেড়ে ২০২২ সালের এ খাতের বরাদ্দ দাঁড়ায় ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা।

যোগাযোগ অবকাঠামো :

১. ২০০৬ সালে জেলা, আঞ্চলিক ও জাতীয় মহাসড়ক ছিল ১২ হাজার ১৮ কিলোমিটার। প্রায় ৩ গুণ বেড়ে ২০২২ সালে হয়েছে ৩২ হাজার ৫২১ কিলোমিটার।

২. ২০০৬ সালে গ্রাম্য সড়ক ছিল ৩ হাজার ১৩৩ কিলোমিটার। ২০২২ সালে প্রায় ৩ গুণ বেড়ে হয়েছে ৮৭ হাজার ৯৭৭ কিলোমিটার।

৩. দেশের মোট রেলপথ ২০০৬ সালে ছিল ২ হাজার ৩৫৬ কিলোমিটার, যা ২০২২ সালে এসে হয়েছে ৩ হাজার ৪৮৬ কিলোমিটার।

বিদ্যুৎ :

১. ২০০৬ সালের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ৩ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট। আওয়ামী লীগ আমলে ৮ গুণ বেড়ে ২০২২ সালে ২৫ হাজার ২২৭ মেগাওয়াট হয়েছে।

২.বিদ্যুৎ সুবিধাভোগীর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ২৮ শতাংশ ছিল ২০০৬ সালে। ২০২২ সাল থেকে দেশের ১০০ শতাংশ জনগণ বিদ্যুৎ পাচ্ছে।

মানুষের জীবনমান উন্নয়ন :

১. ২০০৬ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ দশমিক ৫১ শতাংশ, আর অর্ধেক কমে ২০২২ সালে দারিদ্র্যের হার ২০.৫ শতাংশ হয়েছে।

২. দেশের মানুষের গড় আয়ু ২০০৬ সালে ছিল ৫৯ বছর। ২০২২ সালে গড় আয়ু বেড়ে ৭২ দশমিক ৯ বছর হয়েছে।

৩. শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৮৪ জন ছিল ২০০৬ সালে। ২০২২ সালে ৪ গুণ কমে তা ২১ জনে দাঁড়িয়েছে।

৪. ২০০৬ সালে প্রতি লাখে মাতৃমৃত্যু হার ছিল ৩৭০ জন প্রায় আড়াই গুণ ১৬১ জন হয়েছে ২০২২ সালে।

শিক্ষা :

১. ২০০৬ সালে স্বাক্ষরতার হার ছিল ৪৫ শতাংশ। ২০২২ সালে বেড়ে ৭৫.৬ শতাংশ হয়েছে স্বাক্ষরতার হার।

২. প্রাথমিক শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ ওই সময়ে ছিল ৫৪ শতাংশ। ৪৪.২৫ শতাংশ বেড়ে ২০২২ সালে ৯৮.২৫ শতাংশ হয়েছে।

৩. ২০০৬ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয় সংখ্যা ছিল ৬৫ হাজার ৬৭২ টি। ২০২২ সালে এসে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮৯১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

কৃষি :

১. ২০০৬ সালে সামগ্রিক কৃষি উৎপাদন হয়েছিল ২ কোটি ৬১ লাখ টন। ২০২২ সালে প্রায় ৪ গুণ বেড়ে হয়েছে ৯ কোটি ১৯ লাখ ১৮ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন।

২. দানাদার শস্যের উৎপাদন ২০০৬ সালে ছিল ১ কোটি ৮০ লাখ মেট্রিক টন। ২০২২ সালে হয়েছে ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন।

৩. মোট মৎস্য উৎপাদন ২০০৬ সালে হয় ২১.৩০ লাখ মে. টন। ২০২২ সালে বেড়ে হয়েছে ৫০.১৪ লাখ মে. টন।

৪. ২০০৬ সালে গবাদী পশু সংখ্যা ছিল ৪ কোটি ২৩ লাখ ০১ হাজার। আর ২০২২ সালে ৭ কোটি ৬৩ লাখ ৭৮ হাজার হয়েছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ :

১. ২০০৬ সালে মোট জনগোষ্ঠীর ০.২৩ শতাংশ ছিল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। ২০২২ সালে ইন্টারনেট ব্যবহার করেছে ৭৩.৫৫ শতাংশ মানুষ।
          
২. ২০০৬ সালে মোবাইল ব্যবহারকারী ছিল ১৯ মিলিয়ন বা ১ কোটি ৯০ লাখ। ২০২২ সালে দাঁড়িয়েছে ১৮২.৫৩ মিলিয়ন বা ১৮ কোটি ২০ লাখ।

Share This Article