ভারত থেকে আসছে ডিজেল, সাশ্রয় হবে সময়- কমবে জ্বালানি পরিবহন ব্যয়

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে চড়া দামে জ্বালানি তেল কিনতে হচ্ছে বিশ্ববাসীকে। যদিও বর্তমানে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম খানিকটা কমে এসেছে। এ অবস্থায় জ্বালানি তেলের মজুত বাড়াতে চাচ্ছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু উদ্যোগ,যার মাঝে পাইপ লাইনে ভারত থেকে ডিজেল আমদানি অন্যতম।
জানা গেছে, চলতি বছরে মোট ৫৪ লাখ ৬০ হাজার টন জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বিপিসি। এর মধ্যে ৩৮ লাখ ৬০ হাজার টন পরিশোধিত তেল। বাকিগুলো অপরিশোধিত তেল।
বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে মোট ২১ লাখ টন জ্বালানি তেল আনা হবে। এর মধ্যে ২০ লাখ ৪০ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল ও ৬০ হাজার টন ডিজেল। এছাড়া রাশিয়া ও ব্রুনেইর সঙ্গেও আলোচনা করছে সরকার।
সূত্রমতে, মার্চের মাঝামাঝিতে ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানি শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ডিজেল আমদানির কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন, যদিও গত ১৭ জানুয়ারি সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছিলেন, ‘আগামী জুন মাসে ভারত থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানি শুরু হবে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পাইপলাইনের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় এবং আসন্ন গ্রীষ্ম,সেচ ও রমজানে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ্বালানীর যোগান নিশ্চিত করতে সময় এগিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানি করে সময়, খরচ এবং ঝামেলা কমবে বলে জানিয়েছে বিপিসি। প্রাথমিকভাবে এই পাইপলাইন দিয়ে বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টন ডিজেল আসবে। ধীরে ধীরে পাঁচ বছরের মধ্যে ৪ লাখ টন আনা হবে। পর্যায়ক্রমে বছরে প্রায় ১০ লাখ টন তেল আমদানি করা হবে।
জানা গেছে, বর্তমানে দেশে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে ৭০ থেকে ৭২ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ডিজেলের চাহিদা ৪৮ থেকে ৪৯ লাখ মেট্রিক টন, যার ৮০ শতাংশ সরকার আমদানি করে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ববাজারে বর্তমানে জ্বালানি মূল্যের নিম্নমুখী গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তা কাজে লাগাতে মজুত বাড়াতে চাচ্ছে সরকার। এটি অত্যান্ত ভালো একটি উদ্যোগ। অন্যদিকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে ডিজেল আমদানিতে বাংলাদেশের জন্য বিকল্প উৎস তৈরি হচ্ছে। সামনে যদি আন্তর্জাতিক বাজারে সংকট তৈরি হয়, তাহলে ভারত থেকে বাড়তি ডিজেলও আমদানি করা যাবে।