দিনাজপুরে রাবার ড্যাম: কৃষিতে বদলেছে জীবন

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ দুপুর ০২:৩৫, শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০২৩, ১৮ ফাল্গুন ১৪২৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
  • চারটি রাবার ড্যামের কারণেই এ সুফল পাচ্ছেন দিনাজপুর জেলার লাখো মানুষ।
  • বেড়েছে নদীতে মাছ চাষের সুযোগও।
  • স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এসব ড্যাম।
  • সেতু নির্মাণের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও আর্থসামাজিক ব্যবস্থারও উন্নয়ন হয়েছে।

কৃষি ও চাষাবাদে সমৃদ্ধ অন্যতম জেলা দিনাজপুর। তবে একসময় খরা মৌসুম এলেই শুকিয়ে যেতো নদ-নদী আর খাল-পুকুরের পানি। নদীতে মাছ শিকারে যেতে পারতেন না জেলেরা। সেচ অভাবে অনাবাদি হয়ে পড়ে থাকতো কৃষকের হাজারো হেক্টর জমি। এখন দিন পাল্টেছে। হাওয়া লেগেছে এ জেলার কৃষির পালে। বেড়েছে নদীতে মাছ চাষের সুযোগও। মূলত চারটি রাবার ড্যামের কারণেই এ সুফল পাচ্ছেন জেলার লাখো মানুষ।

জানা গেছে, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর ও সদর উপজেলার আত্রাই নদীতে নির্মিত হয় মোহনপুর রাবার ড্যাম বা ব্যারাজ। ২০১৩ সালের ২২ অক্টোবর এ ড্যাম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খরা মৌসুমে প্রায় ৪৪ কিলোমিটার এলাকায় নদীর পানি মজুত রাখার ক্ষমতা রয়েছে ১৩৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ড্যামটির। বর্তমানে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির সেচ এই ড্যামে করা হয়। ফলে বেড়েছে ১০ শতাংশ চাষাবাদ। যার পরিমাণ ৬ দশমিক ৬ মেট্রিক টন। মোহনপুর ড্যামে বিভিন্নভাবে সুবিধা ভোগ করছেন ৬০ হাজার কৃষক।

এরপর একে একে দিনাজপুরে গড়ে তোলা হয় আরো তিনটি রাবার ড্যাম। এর মধ্যে বিরল উপজেলার ১২ নম্বর ইউনিয়নের পুনর্ভবা নদীতে একটি, বোচাগঞ্জ উপজেলার ছাতইল ইউনিয়নের টাঙ্গন নদীতে একটি, চিরিরবন্দরের কাঁকড়া নদীর ওপর একটি ও খানসামা উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নে প্রবাহিত বেলান নদীতে একটি রাবার ড্যাম নিমার্ণ করে সরকার। 

কয়েক বছর ধরে কৃষকের আশীর্বাদ হয়ে কাজ করছে এসব প্রকল্প। একই সঙ্গে জেলের সংখ্যাও বেড়েছে। এছাড়া ড্যামকেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে পর্যটন শিল্প, যা ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে জেলার অর্থনীতিতে। শুধু রাবার ড্যামই নয়, খরা মৌসুমে সম্পূরক সেচের লক্ষ্যে নির্মিত হয়েছে দুটি জলকপাট। এর একটি গৌরীপুর জলকপাট ও আরেকটি বীরগঞ্জ জলকপাট।

চিরিরবন্দর উপজেলার কৃষকরা বলেন, আগে এক বিঘা জমিতে সেচ দিতে প্রায় চার হাজার টাকা লাগতো। এখন ড্যামের পর্যাপ্ত পানি পাওয়ায় সেচ খরচ দুই থেকে আড়াই হাজার টাকায় নেমেছে।

জেলেরা জানান, আগে নদীতে পানি না থাকায় পরিবার নিয়ে অনাহারে দিনাতিপাত করতেন মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহকারী কয়েকশ জেলে। রাবার ড্যাম হওয়ায় এখন অবসর জেলেরা বছরজুড়ে মাছ চাষ ও শিকার করার সুবিধা পাচ্ছেন।

রাবার ড্যাম বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান এলজিইডি দিনাজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী এফএম খায়রুল ইসলাম বলেন, রাবার ড্যামে পানি জমিয়ে রাখা যায়। এতে পানির স্তর রক্ষা পাচ্ছে। এছাড়া খরা মৌসুমে কম খরচে ও সহজে সেচ পাওয়ায় উৎপাদনও বেড়েছে। একই সঙ্গে বেকার জেলেদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দেশি প্রজাতির মাছ বাড়ছে। ফলে স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এসব ড্যাম।

অন্যদিকে গৌরীপুর জলকপাট নির্মাণের ফলে চাষের আওতায় এসেছে সদর ও বিরল উপজেলার প্রায় চার হাজার ২০০ হেক্টর অনাবাদি জমি। এছাড়া সেতু নির্মাণের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও আর্থসামাজিক ব্যবস্থারও উন্নয়ন হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুক্তাদির খান বলেন, গত কয়েক বছরে জেলায় মাছ ও জেলের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৬ সালে প্রায় ১১ হাজার ৫৭ জেলে ছিলেন। কিন্তু ২০২১ সালে এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৯১২ জনে।

Share This Article


কক্সবাজারে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা

হাসপাতালে বেড়েছে গরমের রোগী

সাঁতার শিখতে গিয়ে পদ্মায় প্রাণ গেল ২ জনের

চট্টগ্রামে ভূমিকম্প, মাত্রা ৩ দশমিক ৭

নারায়ণগঞ্জে বাসচাপায় বাবা-ছেলে নিহত, আহত মা

চুয়াডাঙ্গাকে ছাড়িয়ে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে

স্থানীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রয়োজন নেই: ইসি আলমগীর

পছন্দের মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিঠি

নাফ নদ দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকল মিয়ানমারের ১৩ বিজিপি সদস্য

দাবদাহে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, হাসপাতালে রোগীর চাপ

সিলেটে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে

চুয়াডাঙ্গায় হিট অ্যালার্ট জারি