আলীকদম-পোয়ামুহুরী সড়ক দুই দিনের দূরত্বকে করেছে দেড় ঘণ্টা
- ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি বদলে দিয়েছে দুর্গম কুরুকপাতা ইউনিয়নের মানুষের জীবনযাপন।
- স্থানীয়দের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবায় সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি ভূমিকা রাখবে পর্যটনেও।
- সড়কটির নির্মাণে যে ব্যয় ধরা হয়েছিল, তা থেকে সাশ্রয় ৩৫ কোটি টাকা।
বান্দরবানের সীমান্তবর্তী কুরুকপাতা ইউনিয়নের দুর্গম এলাকা পোয়ামুহুরী। সেখান থেকে হেঁটে অথবা নৌকায় আলীকদম উপজেলা সদরে আসতে স্থানীয়দের সময় লাগত দুইদিন। সেই দুইদিন হয়েছে এখন দেড়ঘণ্টা। ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি বদলে দিয়েছে দুর্গম কুরুকপাতা ইউনিয়নের মানুষের জীবনযাপন।এটি স্থানীয়দের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবায় সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি ভূমিকা রাখবে পর্যটনেও।
জানা গেছে, ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫০৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা, কিন্তু গুণগত মান বজায় রেখে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের অধীনে ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (ইসিবি) ৪৭৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ করেছে। ফলে সাশ্রয় হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা।
ইতিমধ্যে বান্দরবান জেলার আলীকদম-পোয়ামুহুরী সড়ক প্রকল্পের সুফল পেতে শুরু করেছে স্থানীয়রা। সড়ক নির্মাণের ফলে সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি দুর্গমে এলাকায় বসবাসকারী ম্রো, মার্মা, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বাঙালিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবাসহ নানা সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। উঁচু নিচু সড়কের বিভিন্ন স্থানে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থানও নির্মিত হয়েছে। ফলে পর্যটন শিল্পের বিকাশ স্থানীয়দের জীবনমান উন্নয়ন ভূমিকা রাখছে সড়কটি।
স্থানীয়রা জানান, সড়কটি নির্মাণের আগে কুরুকপাতা ইউনিয়নের বাসিন্দাদের উপজেলা যেতে হতো হেঁটে অথবা নৌকায়। বর্ষা মৌসুমে কখনও কখনও সব ধরনের যাতায়াত ব্যবস্থাই বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। যার ফলে চিকিৎসাসেবা, কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ ও শিক্ষা ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তিতে পড়ত এলাকার বাসিন্দারা। সড়কটি নির্মাণের কারণে এরই মধ্যে আর্থ-সামাজিক জীবনে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। পাহাড়িদের তাঁত ও অন্যান্য হস্তশিল্পের বাজার বাড়ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হওয়ায় স্থানীয় ফল ও ফসল দ্রুত শহরে পৌঁছে যাচ্ছে।
তাছাড়া আলীকদম-জানালিপাড়া-কুরুকপাতা-পোয়ামুহুরী সড়কটি ৩১৭ কিলোমিটার সীমান্ত সড়কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ফলে সড়কটি দেশের ভূখণ্ড রক্ষা ও সীমান্তে নিরাপত্তা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখবে।