বল বিএনপির মাঠে: নির্বাচনকে ছাপিয়ে খালেদা ইস্যুতে ব্যস্ত বিএনপি!
নির্বাহী আদেশে প্রায় তিন বছর ধরে জেলের বাইরে বাসায় থাকছেন খালেদা জিয়া। অংশ নেননি রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডেও। কিন্তু চলতি বছরেই রাজনীতির মাঠে ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির এই চেয়ারপার্সন। তার রাজনীতি করতে পারা না পারার ইস্যু নিয়ে বিএনপি নেতাদের মনেও ঘুরপাক খাচ্ছে নানান প্রশ্ন।
বিশ্লেষকদের মতে, খালেদা জিয়া স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফিরলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কে- এমন প্রশ্ন এখন অনেকের মনেই নাড়া দিচ্ছে। তবে খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে আসার পর প্রতিপক্ষের চেয়ে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল বাড়ার সম্ভবনাই বেশি। বিশেষ করে খালেদা-তারেক, বা তারেক-ফখরুল দ্বন্দ্ব আরও বাড়বে। কেননা অনেক বছর ধরে এ খেলাটাই চলছে বিএনপিতে।
খালেদা জিয়ার রাজনীতি ইস্যু নিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেছেন, কয়েকদিন ধরেই খালেদা জিয়ার রাজনীতি করা না করা নিয়ে কথা বলছে সরকারের বিভিন্ন মহল। সরকারের একটি মহল বলছে রাজনীতি করতে খালেদা জিয়ার বাধা নেই; আবার আরেক মহল এর উল্টো বলছে। বর্তমানে বিএনপির বিভিন্ন আন্দোলন-কর্মসূচিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে খালেদা ইস্যুটি। আর এ খেলাই দেখতে চান সরকারপক্ষের লোকজন। তাই তারা বল ছুড়ে দিয়েছে বিএনপির মাঠে।
সিনিয়র এই সাংবাদিক আরও বলেন, খালেদা জিয়া তিন বছর কেন রাজপথে এলেন না; এ নিয়ে বিএনপির নেতাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে। চলাচলে সমস্যা থাকায় তিনি রাজপথে আসতে পারেননি ঠিক, কিন্তু চাইলে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে নানাভাবেও বার্তা দিতে পারতেন নেতাকর্মীদের কাছে। তবে কোনো কিছুই করেননি তিনি। তাহলে কি দল থেকে বাধা আসছে? এসব সরকারের মাইন্ডগেম বলেও বিএনপির অনেক নেতা মনে করতে পারেন।
তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন- ‘খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে বাধা নেই। তা দিয়ে প্রকারান্তরে এই কথা বলে দিলেন যে, খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে আসার পথে দলের ভেতরে প্রধান বাধা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। ওবায়দুল কাদের যে বলেন, 'খেলা হবে খেলা হবে'। এখন খেলা তো ঠেলে দিলেন বিএনপির দিকে’।
অজয় দাশগুপ্ত বলেন, এবারের নির্বাচনে বিএনপি আসতে চাইলে খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফিরতে হবে। সেখানে রাজনীতি খেলা তো থাকবেই। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মধ্যে কোনো মতপার্থক্য দৃশ্যমানভাবে দেখাতে পারলেই সফল হবে রাজনীতির খেলা। তবে শেষ পর্যন্ত এই খেলায় বিএনপি অংশ নেবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়। এছাড়া রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করার কৌশল ক্ষমতাসীনরা বেশ ভালোই জানেন বলেও মন্তব্য করেন অজয় দাশ গুপ্ত।