পাগলা মহিষের আক্রমণে আওয়ামী লীগ নেতাসহ তিনজনের মৃত্যু

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:১২, মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৩, ১০ মাঘ ১৪২৯

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে পাগলা মহিষের আক্রমণের শিকার হয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ তিনজন মারা গেছেন। এঘটনায় গ্রামবাসীর উদ্যোগে মহিষটি ঘেরাও করে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

মৃত হাসমত আলী খান লাউহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। হাসমত আলী ছাড়াও হাজেরা বেগম ও কিতাব আলী নামে আরো দুইজন নিহত হয়েছেন। এদের মৃত্যুতে পুরো ইউনিয়ন জুড়ে চলছে শোকের মাতম।

 

স্থানীয়রা জানান, গত রবিবার পার্শ্ববর্তী বারোপাখিয়া গ্রামের শরীফ মিয়ার পালিত মহিষ হঠাৎ অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। যাকে সামনে পায়, তাকেই গুতাতে থাকে। মহিষের আক্রমণে শরীফ মিয়াও আহত হন। এক পর্যায়ে মহিষটিকে স্থানীয় লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া করে। পরে মহিষটি লাউহাটি এলাকায় চলে আসে। সেখানেও মানুষের উপর আক্রমণ শুরু করে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিক জানান, হাসমত আলী তাকে ফোন করে মহিষের আক্রমনের কথা তাৎক্ষনিকভাবে জানান। এ ব্যাপারে পুলিশ ও প্রাণী সম্পদ বিভাগে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। এর মধ্যে মানুষের যাতে ক্ষতি না হয় সেজন্য তিনি মহিষটির আশেপাশেই অবস্থান করছিলেন। মানুষকে সতর্ক করছিলেন। এর মধ্যে হঠাৎ তাকেই আক্রমণ করে বসে মহিষটি।

লাউহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন মোহাম্মদ খান জানান, মহিষের আক্রমণে ১০/১২ জন আহত হন। এর মধ্যে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারুটিয়া গ্রামের আজগর আলীর স্ত্রী হাজেরা বেগম (৪২) রবিবার বিকেলে মারা যান। সোমবার রাতে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হাসমত আলী (৫৭)। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বারোপাখিয়া গ্রামের কিতাব আলীর অবস্থার অবনতি হয় সোমবার রাতে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

রাতেই হাসমত আলী ও কিতাব আলীর লাশ বাড়িতে আনা হয়। মঙ্গলবার সকালে তাদের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে। লাউহাটি বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকন বন্ধ রেখে কালো ব্যাচ ধারণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করে শোক পালন করে। লাউহাটি গ্রামের মোস্তফা কামাল জানান, মহিষের আক্রমণে তিনজনের মৃত্যু, এটা বিশ্বাস করতেই কষ্ট হচ্ছে। এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত।

হাসমত আলী খানের ছেলে স্বাধীন খান বলেন, মহিষের আক্রমণে আমার বাবার এভাবে মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন। তিনি মানুষকে রক্ষা করতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়েছেন।

দেলদুয়ার উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন সারোয়ার জানান, মহিষের আক্রমণের খবর পাওয়ার পর প্রাণী সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে একটি দল ঘটনাস্থলে নেওয়া হয়। দলটি ঢাকা থেকে এসে মহিষকে অচেতন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। তার আগেই স্থানীয় লোকজন মহিষটিকে হত্যা করে।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article