আজীবন ‘খেলা হবে’ স্লোগান দিয়ে যাব: ওবায়দুল কাদের
বিভিন্ন সমাবেশে ‘খেলা হবে’ বলে স্লোগান দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের দেওয়া এ স্লোগান এখন ওবায়দুল কাদেরের মুখেই বেশি শোনা যায়। এ নিয়ে সংসদেও উঠেছে বিতর্ক। তবে ‘খেলা হবে’ স্লোগান আজীবন দিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
(৫ ডিসেম্বর) সোমবার দুপুরে নোয়াখালী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
‘খেলা হবে’ স্লোগান জনগনেরর পছন্দের স্লোগান উল্লেখ্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি আজীবন এ স্লোগান দিয়ে যাব, এ স্লোগান জনগণ খুবই পছন্দ করে। তাই আমি বলব- খেলা হবে, হবে খেলা। এ ডিসেম্বরে খেলা হবে, আগামী নির্বাচনে খেলা হবে, অর্থপাচারের বিরুদ্ধে খেলা হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘টাকা চুরির বিরুদ্ধে খেলা হবে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে খেলা হবে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে খেলা হবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে খেলা হবে। কিন্তু এ স্লোগান ফখরুলসহ আরও কয়েকজনের পছন্দ না। জনগণের পছন্দের এ স্লোগান আমি দিয়ে যাব, আমি বলে যাব খেলা হবে।’
স্থানীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘একরামুল করিম চৌধুরী (স্থানীয় সংসদ সদস্য) আমার ছোট ভাই। দল এবং নোয়াখালীর স্বার্থে আমি একরামুল করিম চৌধুরী ও আমার ভাই আবদুল কাদের মির্জাসহ তাদের সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছি। কোন্দলমুক্ত নোয়াখালী আমি দেখতে চাই। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাও কোন্দল আর কোলাহল দেখতে চান না, পছন্দও করেন না।’
সম্মেলনের বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘বাস-ট্রেনে পেট্টোল ঢেলে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করবেন, আর মামলা হলে গ্রেপ্তার করলে এখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা বলেন-বিএনপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার নামে নাইকো দুর্নীতি মামলাসহ আরও দুর্নীতির মামলা রয়েছে। এসব মামলার রায় হলে হয়তো বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও তাদের নেতাদের বাকি জীবন কারাগারেই থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে আহ্বান করে বলব- দেশে আইন আছে, সরকার ও সংবিধান আছে। যেখানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সরকার সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে, সেখানে সমাবেশ করুন। অন্যভাবে সমাবেশ করার চেষ্টা করলে, নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের লক্ষ লক্ষ কর্মী আছে, তারাই আপনাদের নৈরাজ্য-অপকর্ম রুখে দেবে।’
সম্মেলন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ব কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমকে পুনরায় সভাপতি ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তা ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি। এ পদে জেলা আওয়ামী লীগের ডেলিগেটদের প্রত্যক্ষ ভোটেও হতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এজন্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র মো. সহিদ উল্যাহ খাঁন সোহেলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আলহাজ্ব মো. আবদুস সবুর, সমাবেশে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, নোয়াখালী এমপি মোরশেদ আলম, এইচ এম ইব্রাহিম, মামুনুর রশীদ কিরণ, আয়েশা ফেরদাউস, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা খানম সাকি প্রমুখ।