যে ৬ কারণে চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরল ইংলিশরা

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ রাত ০৯:১১, রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২২, ২৮ কার্তিক ১৪২৯

পাকিস্তানকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল ইংল্যান্ড। ফাইনালের মঞ্চে ৫ উইকেটের জয় পায় জস বাটলারের দল। এর আগে ২০১০ ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথমবার ২০ ওভারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংলিশরা।

 

পাকিস্তানের সামনেও দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের হাতছানি ছিল। দলটি ২০০৯ ইংল্যান্ড আসরে শ্রীলংকাকে হারিয়ে ট্রফির স্বাদ পেয়েছিল। তবে আজ পর্যাপ্ত রান তুলতে পারায় হারতে হলো বাবর আজমদের। এছাড়া ১৯৯২ অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের সুখস্মৃতি ফেরাতে ব্যর্থ হলো দলটি।

আজ রোববার ফাইনালে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে খেলতে নামে দুদল। বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় ম্যাচটি শুরু হয়। যেখানে প্রথমে ব্যাট করা নামা পাকিস্তান নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রান করে। জবাবে ৫ বেন স্টোকসের হাফসেঞ্চুরিতে ভর করে ৫ উইকেট হারিয়ে ও ৬ বল বাকি থাকতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংলিশরা।

এ ম্যাচে ইংল্যান্ডের জয় ও পাকিস্তানের পরাজয়ে ৬টি কারণ বের করেছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। দেখে নিন কারণগুলো।

আক্রমণাত্মক ব্যাটিং: ২০১৫ সালের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর ইংল্যান্ড যে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছিল, সেই মন্ত্রের ফসল হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতল ইংল্যান্ড। পরিস্থিতি যাই হোক কেন, শুরুটা একেবাকে আক্রমণাত্মকভাবে করেছে ইংল্যান্ড। এবার বিশ্বকাপে হাইস্কোরিং ম্যাচের সংখ্যা কম থাকায় জস বাটলার, অ্যালেক্স হেলসদের আক্রমণাত্মক শুরুর কারণে শেষের দিকে আয়ত্তের বাইরে চলে যায়নি রিকোয়ার্ড রানরেট। উইকেট হারিয়ে চাপ বাড়লেও সবসময় পুরো বিষয়টা নিয়ন্ত্রণে ছিল। বাটলার এবং হেলসের স্ট্রাইক রেট ১৫০-র কাছাকাছি থেকেছে।

ইংল্যান্ডের লম্বা ব্যাটিং লাইন-আপ: সেমিফাইনাল ও ফাইনালে ইংল্যান্ডের যে ১১ জন মাঠে নেমেছিলেন, তাদের মধ্যে ১১ জনই ব্যাট করতে পারেন। ফলে চার-ছয় উইকেট পড়ে গেলেও কেউ না কেউ ঠিক থেকেই যাচ্ছিলেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হারলেও পুরো ম্যাচটা হলেও ইংল্যান্ড জিতে যেত। যে কাজটা দীর্ঘদিন ধরেই শুরু করেছে ইংল্যান্ড - একাধিক স্কিলের খেলোয়াড়দের দলে রাখা।

স্যাম কারান: এবার যে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ জিতল, সেটার অন্যতম কারণ হলেন কারান। যিনি নতুন বলের বোলার হিসেবে খেলোয়াড় জীবন শুরু করেন, ডেথ ওভারে এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার হয়ে উঠেছেন। তার কারণেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১০ রানে পাঁচ উইকেট, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১ রানে দুই উইকেট, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৬ রানে দুই উইকেট, শ্রীলংকার বিপক্ষে ২৭ রানে এক উইকেট নিয়েছিলেন। ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে চার ওভারে তিন উইকেটে ১২ রান নেন।

জস বাটলারের অধিনায়কত্ব: সেমিফাইনাল ও ফাইনালে দলের সেরা বোলারকে ছাড়াই খেলতে নেমেছিল ইংল্যান্ড। তাতে দমে না গিয়ে দুর্দান্তভাবে বোলারদের ব্যবহার করলেন বাটলার। ব্যাটিংয়ে তো সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, বোলারদের ব্যবহারের ক্ষেত্রেও দুর্দান্ত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন। আদিল রশিদ, কারানদের একেবারে পরিকল্পনা করে ব্যবহার করেছেন। তাকে দেখে মনে হয়নি, কোনোটা পরিকল্পনা ছাড়া কাজ করছেন।

চুম্বক বেন স্টোকস: ইংল্যান্ড বিপদে, ইংল্যান্ডের মহাকাব্যিক জয়ে স্টোকসের অবদান থাকবে না, এমন ভাবাই কার্যত দুষ্কর হয়ে থেকেছে। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের মধ্যে চুম্বক হয়ে থেকেছেন। সুপার ১২-র শেষ ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে যখন ইংল্যান্ড চাপে পড়ে গিয়েছিল, তখন ইংরেজদের উদ্ধার করেছিলেন স্টোকস। ফাইনালেও ব্যতিক্রম হয়নি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম অর্ধশতরান করে ইংল্যান্ডকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করলেন।

সার্বিকভাবে ইংল্যান্ডের বোলিং: যখন দরকার, তখন জ্বলে উঠেছেন ইংল্যান্ডের বোলাররা। স্রেফ গতিতে বিপক্ষের নাভিঃশ্বাস তুলেছিলেন মার্ক উড। তিনি ছিটকে গেলেও স্টোকস, কারানরা সেই শূন্যস্থান পূরণ করেছেন। বিশেষত বিশ্বকাপের শেষ তিনটি ম্যাচে অসাধারণ বল করেছেন আদিল রশিদ। শ্রীলংকা, ভারত ও পাকিস্তান - তিনটি নক-আউট ম্যাচেই দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। যা বিপক্ষকে কম রানে বেঁধে রাখতে সাহায্য করেছে।

Share This Article