চন্দ্রগ্রহণ কী, কেন হয়

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ রাত ০৮:৫৫, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০২২, ২৩ কার্তিক ১৪২৯

আমরা সবাই জানি চাঁদ যেমন পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে ঠিক তেমন ভাবেই পৃথিবীও সূর্যকে কেন্দ্র করে উপবৃত্তাকার কক্ষপথে ঘুরছে। আর এইভাবে ঘুরতে ঘুরতে একটা সময় চাঁদ, সূর্য ও পৃথিবী একই সরলরেখায় চলে আসে।

 

যখন এই সরলরেখায় আমাদের পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্যের মাঝে চলে আসে, তখন সূর্যের আলো পৃথিবীর কারণে চাঁদে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়। অর্থাৎ পৃথিবীর ছায়ার জন্য চাঁদে সূর্যের আলো পৌঁছায় না। আর আমরা সবাই জানি চাঁদের নিজস্ব আলো নেই। চাঁদ সূর্যের আলোয় নিজেকে আলোকিত করে। কিন্তু পৃথিবীর বাধার কারণে চাঁদ যখন সূর্যের আলোয় নিজেকে আলোকিত করতে ব্যর্থ হয়, তখন কিছু সময়ের জন্য চাঁদকে অদৃশ্য মনে হয়। এ পর্যায়টিকে সংক্ষেপে চন্দ্রগ্রহণ বলা হয়।

চন্দ্রগ্রহণ প্রধানত ৩ ধরনের হয়ে থাকে। পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ, আংশিক চন্দ্রগ্রহণ ও পেনাম্ব্রাল চন্দ্রগ্রহণ।

আমাদের পৃথিবী যখন, সূর্যকে আংশিক ঢেকে ফেলে, তখন পৃথিবীর ছায়ার জন্য চাঁদের কিছু অংশ অদৃশ্য হয়ে যায় আর তখন তাকে আংশিক চন্দ্রগ্রহণ বলা হয়।

আর পৃথিবী যখন সূর্যকে সম্পূর্ণরূপে ঢেকে নেয়, তখন বিপরীত স্থানে অবস্থান করা চাঁদকে পুরোপুরি দেখা যায় না, একে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ বলে।

অন্যদিকে চাঁদ যখন পৃথিবীর ছায়ার দূরবর্তী স্থান দিয়ে অতিক্রম করে, তখন তাকে পেনাম্ব্রাল চন্দ্রগ্রহণ বলা হয়। এই ধরনের চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ খুব কম পরিমাণে অস্পষ্ট হয়ে থাকে, যার ফলে তা আমাদের চোখে খুব কম ধরা পড়ে।

চাঁদের তুলনায় পৃথিবীর ব্যাস অনেক বেশি হওয়ায় পৃথিবীর ওই ব্যাসের পথ অতিক্রম করতে পৃথিবীর তুলনায় অধিকতর ছোট চাঁদের অনেকটা সময় লাগে। এই জন্য সূর্যগ্রহণের স্থায়িত্ব কয়েক মিনিট হলেও চন্দ্রগ্রহণের স্থায়িত্ব ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ কেন রক্তিম বর্ণ ধারণ করে?

পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ, পৃথিবীর মাঝখানে অবস্থান করে। তখন পৃথিবীর গাঢ় ছায়া চাঁদের উপর পড়ায় চাঁদ প্রায় অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তখনও সূর্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা ও গ্যাস দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে চাঁদের উপর পড়ে। আর লাল বর্ণের আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য অন্যান্য বর্ণের আলোর তুলনায় বেশি হওয়ায় এটি সব থেকে কম বিচ্ছুরিত হয়। তাই ওই সময় সূর্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে লাল বর্ণের আলো চাঁদের উপর পড়ে তাই চাঁদকে তখন লাল দেখায়।

এদিকে এ বছরের দ্বিতীয় চন্দ্রগ্রহণ ৮ নভেম্বর। যেখানে প্রথম চন্দ্রগ্রহণ হয়েছিলো গত ১৬ মে।

স্পেস.কমের তথ্যমতে, আগামী প্রায় আড়াই বছরের জন্য এটিই শেষ পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ হতে চলেছে। কারণ পরের চন্দ্রগ্রহণ দেখতে বিশ্ববাসীকে অপেক্ষা করতে হতে পারে ২০২৫ সালের ১৪ মার্চ পর্যন্ত। ওইদিন আবার পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে পৃথিবী থেকে। তাছাড়া ওই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর আরও একটি চন্দ্রগ্রহণের সাক্ষী হতে পারে পুরোবিশ্ব।

বিষয়ঃ গবেষণা

Share This Article