নিখোঁজ তরুণদের সশস্ত্র হামলার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় : র‌্যাব

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:৩০, বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২২, ২১ আশ্বিন ১৪২৯

কুমিল্লা ও দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া চার তরুণসহ সাতজনকে মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- পটুয়াখালীর হোসাইন আহম্মদ (৩৩), নেছার উদ্দিন ওরফে উমায়ের (৩৪) ও বণি আমিন (২৭)। কুমিল্লা থেকে নিরুদ্দেশ হওয়া গ্রেফতার চার তরুণ হলেন- ইমতিয়াজ আহমেদ রিফাত (১৯), মো. হাসিবুল ইসলাম (২০), রোমান শিকদার (২৪) ও মো. সাবিত (১৯)।

 

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে নব্য জঙ্গি সংগঠনের তিন ধরনের প্রচারপত্র, বিস্ফোরক তৈরির নির্দেশিকা সম্বলিত পুস্তিকা, নব্য জঙ্গি সংগঠনের কর্মপদ্ধতি (খসড়া মানহায), উগ্রবাদী বই ‘নেদায়ে তাওহীদের’ চার কপি ও জিহাদি উগ্রবাদ ভিডিও সম্বলিত একটি ট্যাব জব্দ করা হয় বলে দাবি র‌্যাবের।
র‌্যাব জানায়, গত ২৩ আগস্ট কুমিল্লা সদর এলাকা থেকে ৮ তরুণ নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় নিখোঁজ সংক্রান্তে গত ২৫ আগস্ট কুমিল্লার কোতয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়। ঘটনাটি গণমাধ্যমে বহুলভাবে আলোচিত হয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী চাঞ্চল্যের তৈরি হয়। কুমিল্লা হতে নিখোঁজ ৮ তরুণের মধ্যে শারতাজ ইসলাম নিলয় (২২) নামক ব্যক্তি গত ১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কল্যাণপুরের নিজ বাড়িতে ফিরে আসে। র‌্যাব ফিরে আসা নিলয়কে তার পরিবারের হেফাজতে রেখে বাকি নিখোঁজ সাতজন এবং জড়িত অন্যান্যদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে।

র‌্যাব আরও জানায়, গত ২৩ আগস্ট সকাল ১০টায় নিলয়সহ নিখোঁজ ৫ তরুণ নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে কুমিল্লা টাউন হল এলাকায় আসে। পরবর্তীতে সোহেলের নির্দেশনায় তারা দুই ভাগ হয়ে লাকসাম রেল ক্রসিংয়ের নিকট হাউজিং স্টেট এলাকার উদ্দেশে যাত্রা করে। নিলয়, সামি ও নিহাল একত্রে গমন করে কিন্তু ভুলবশত তারা চাঁদপুর শহর এলাকায় চলে যায়। তারা ভুল বুঝতে পেরে রাত্রিযাপনের উদ্দেশে চাঁদপুরের একটি মসজিদে অবস্থান করলে কর্তব্যরত পুলিশ তাদের সন্দেহজনক আচরণের কারণে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরবর্তীতে দায়িত্বরত পুলিশ তাদের পাশের একটি হোটেলে রেখে যায় এবং পরদিন বাসায় চলে যেতে নির্দেশ দেয়। তারা রাতের বেলা হোটেল থেকে কৌশলে পালিয়ে পূর্ব নির্ধারিত জায়গায় গমন করলে সোহেল ও অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তাদেরকে লাকসামের একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। ওই বাড়িতে পূর্ব থেকেই অবশিষ্ট তিনজন অবস্থান করছিল। পরবর্তীতে নিলয়, নিহাল, সামি ও শিথিলকে কুমিল্লা শহরের একটি মাদরাসার মালিক নিয়ামত উল্লাহর কাছে পৌঁছে দেয় সোহেল।  

র‌্যাবের দাবি, নিয়ামত উল্লাহর তত্ত্বাবধানে ১ দিন থাকার পর সোহেল ৪ জনকে নিয়ে ঢাকায় আসে এবং নিহাল, সামি ও শিথিলকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির নিকট বুঝিয়ে দিয়ে নিলয়কে পটুয়াখালীর একটি লঞ্চের টিকিট কেটে পটুয়াখালীতে পাঠায়। পটুয়াখালীতে গ্রেফতারকৃত বনি আমিন নিলয়কে গ্রহণ করে স্থানীয় এক মাদরাসায় নিয়ে যায় এবং গ্রেফতারকৃত হুসাইন ও নেছারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। বনি আমিন নিলয়কে ৩ দিন তার বাসায় রাখে। তার বাসায় অতিথি আসায় নিলয়কে হুসাইনের মাদরাসায় রেখে আসে। নিলয় মাদরাসা হতে পলায়ন করে গত ১ সেপ্টেম্বর কল্যাণপুরে নিজ বাড়িতে ফিরে আসে।  

নিলয়ের দেওয়া তথ্যমতে বনি আমিনকে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক এলাকা হতে গ্রেফতার করে র‌্যাব। বনি আমিনের তথ্য মতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এলাকা হতে নেছার উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হুসাইন আহমদ, রিফাত, হাসিব, রোমান শিকদার ও সাবিতকে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত হাসিব ও রিফাত এক বছর আগে কুমিল্লার কোবা মসজিদের ইমাম হাবিবুল্লাহর নিকট সংগঠনের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে ধারণা পায়। পরবর্তীতে হাবিবুল্লাহ তাদের উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ করে ফাহিমের কাছে নিয়ে যায়। ফাহিম তাদের কুমিল্লার বিভিন্ন মসজিদে নিয়ে গিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাত্ত্বিক জ্ঞান প্রদান করত ও ভিডিও দেখাত। এইভাবে তাদেরকে সশস্ত্র হামলার প্রস্তুতি নিতে পরিবার হতে বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়ে আগ্রহী করে তুলে। গ্রেফতারকৃত রোমান স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য গত ৪০ দিন আগে নিরুদ্দেশ হয় এবং গ্রেফতারকৃত সাবিত ২ মাস আগে পটুয়াখালী থেকে নিখোঁজ হয়।

র‌্যাব আরো জানায়, সোহেল নামক ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে কুমিল্লা হতে নিখোঁজ হওয়া তরুণদের সশস্ত্র হামলার প্রস্তুতির জন্য প্রশিক্ষণ নিতে পটুয়াখালী ও ভোলাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রেরণ করা হয়। নিরুদ্দেশ হওয়া তরুণদের সেইফ হাউজে পটুয়াখালী ও ভোলার বিভিন্ন চর এলাকায় সশস্ত্র হামলা, বোমা তৈরি, শারীরিক কসরত ও জঙ্গিবাদবিষয়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

Share This Article


লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল, নিহত ৭

বাংলাদেশ-ভুটান তিন সমঝোতা স্মারক সই, ১টি নবায়ন

বঙ্গবন্ধুর কারণে ভারত বাংলাদেশে ঘাঁটি গড়তে পারেনি: শেখ হাসিনা

বুধবার থেকে রাত ৯টার পরও চলবে মেট্রোরেল

৪ দিনের সফরে ঢাকায় ভুটানের রাজা

ভুটানের রাজা ঢাকায় আসছেন আজ, সই হবে তিন এমওইউ

২২ দি‌নে এলো সাড়ে ১৫ হাজার কো‌টি টাকার রেমিট্যান্স

ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

ব্যবসায়ীদের অধিকতর মুনাফার কারণে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে

এমভি আবদুল্লাহতে বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র বসিয়েছে জলদস্যুরা

দোকানে টিসিবির পণ্য দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

চ্যালেঞ্জ কমেনি সুপেয় পানির, স্তর নামছেই