পরিবার থেকে বের করে দেওয়া হলো আ.লীগ প্রার্থীকে

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৬:৫৩, বৃহস্পতিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ৮ পৌষ ১৪২৮

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন সহোদর ভাই মো. কামাল হোসেন। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী আজহারুলকে পরিবারের লোকজন বাসা থেকে বের করে দিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে টাঙ্গাইলজুড়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। আত্মীয়স্বজনরাও আলাদা আলাদা পক্ষ নিয়েছেন। ভোটাররাও বিব্রত হচ্ছেন, কাকে ভোট দেবেন।

মগড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম ছাড়াও তার ছোটভাই মো. কামাল হোসাইন (চশমা প্রতীক) প্রার্থী হয়েছেন। তিনি সদর থানা আওয়ামী লীগের সদস্য।

এছাড়াও অপর দুই বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোতালিব হোসেন (আনারস প্রতীক) ও সদর উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম বুলবুল (মোটরসাইকেল)। বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তিনজনকেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জাতীয় পার্টি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আব্দুল বাছেদ মণ্ডল।

আজহারুল ইসলাম এ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাকে এবার মোকাবেলা করতে হচ্ছে তার আপন ভাইসহ দলের তিন বিদ্রোহী প্রার্থীকে।

আপন দুই ভাই ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ায় বিষয়টি শুধু ওই ইউনিয়ন নয় পুরো টাঙ্গাইলে আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। দলের কিছু নেতাকর্মী বর্তমান চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলামের দিকে আবার কিছু নেতাকর্মী তার ভাইসহ অন্য বিদ্রোহীদের পক্ষে কাজ করছেন। তবে তাদের পরিবারের সদস্যসহ আত্মীয়স্বজনরাও বিভক্ত হয়ে গেছেন দুই ভাইয়ের দিকে। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী আজহারুলকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে পরিবারের লোকজন। তিনি এখন ভাড়া বাসায় থাকেন বলে জানা গেছে।

বুধবার দুপুরে সরেজমিন ওই ইউনিয়নের গেলে কুইজবাড়ি বাজারে একটি চায়ের দোকানে কথা হয় কয়েকজন গ্রামবাসীর সঙ্গে। বেলাল হোসেন নামক একজন ভোটার বলেন, ক্ষমতার জন্য ভাই ভাইয়ের মধ্যে যুদ্ধ হয় আগে শুনছি। এবার নিজেই দেখতেছি।

অপরজন রেজাউল করিম বলেন, আমরা সাধারণ ভোটাররা বিব্রত। নির্বাচনের পরে ভাইয়ের সাথে ভাইয়ের ঠিকই মিল থাকবে। তবে আমরা ভোটাররা আলাদা হয়ে যাচ্ছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আওয়ামী লীগের কর্মী বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী যোগ্য না হওয়ায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা এবার বিদ্রোহী ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষ নিয়েছে। নৌকার মাঝিকে নির্বাচিত করার বিষয়ে খুব চিন্তায় আছি।

তবে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া বড়ভাই আজহারুল ইসলাম মনে করেন ভোটযুদ্ধে অংশ নিয়ে তাদের সম্পর্কের অবনতি হবে না। তিনি জানান, পরপর দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এলাকার মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তাই এলাকার মানুষ ও দল তাকেই চেয়েছে। এজন্যই প্রার্থী হয়েছেন। ভাইকে তিনি ভাইয়ের চোখেই দেখেন।

ছোটভাই কামাল হোসাইন বলেন, গত নির্বাচনের সময় বড়ভাই তাকে তার মায়ের সামনে কথা দিয়েছিলেন এবার চেয়ারম্যান পদে তিনি প্রার্থী না হয়ে আমাকে প্রার্থী করবেন। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি। মাসহ অপর ছয় ভাই এবং বেশিরভাগ আত্মীয়স্বজনের তার প্রতি সমর্থন রয়েছে। এবার নির্বাচন করায় তাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এএইচএম কামরুল হাসান বলেন, চতুর্থ ধাপে টাঙ্গাইলের তিন উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে মোট চেয়ারম্যান প্রার্থী ৯৭ জন। সাধারণ সদস্য প্রার্থী ৬৮৫ জন ও সংরক্ষিত প্রার্থী ২৩২ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৬ হাজার ১৮৭ জন। নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে আশাবাদী।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article