বিবিসি বাংলা রেডিও: একটি অধ্যায়ের বিদায় ঘণ্টা

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৫:৫৭, শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২, ১৬ আশ্বিন ১৪২৯

সেই ছোটবেলা থেকে রেডিওতে বিবিসি বাংলার খবর শুনে আসছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের স্কুল শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন। রেডিওর নব ঘুরিয়ে শুনতে শুনতে যে ভালো লাগার শুরু, নতুন সময়ে মোবাইল ফোনে এফএম রেডিও হয়েও সে ভালো লাগা টিকে ছিল; এখন তা কেবলই স্মৃতি হতে চলেছে।

দেলোয়ার হোসেনের মত অগণিত শ্রোতার দৈনন্দিন জীবনের সাথে ৮১ বছর ধরে জড়িয়ে থাকা বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচার বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন (বিবিসি)। কেবল বাংলা নয়, আরবি, ফার্সি, চীনা, কিরগিজ, উজবেক, হিন্দি, ইন্দোনেশিয়ান, তামিল ও উর্দু ভাষার রেডিও সম্প্রচারও আর শোনা যাবে না বিবিসিতে।

কোনো ভাষা বিভাগই অবশ্য পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে না। অনলাইন সংবাদমাধ্যম হিসেবে অনেকগুলো ভাষার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে বিবিসি।সেই সঙ্গে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস থেকে ৩৮২ জন কর্মী কমানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বছরে খরচ কমবে ৩২০ কোটি টাকার বেশি।

 

বিবিসি বাংলায় যেসব রেডিও অনুষ্ঠান হয়, তা এখন ওয়েবসাইটেও শোনা যায়। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এসব অনুষ্ঠান আর কোনো মাধ্যমেই শোনা যাবে না। তবে ডিজিটাল মাধ্যমে বিবিসি বাংলার অন্যান্য কন্টেন্ট উপভোগ করা যাবে।

আর লন্ডনে বিবিসি সদরদপ্তরে যেসব বিদেশি ভাষার বিভাগ আছে, কিছু দেশের ক্ষেত্রে সেখানেও কিছু কাটছাঁট করে সেসব দেশে অফিস চালু রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে গার্ডিয়ান।

আর কতদিন চলবে বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচার? এ প্রশ্নের উত্তরে শুক্রবার বিবিসির প্রবাহ অনুষ্ঠানে বাংলা বিভাগের প্রধান সাবির মুস্তাফা বলেন, “আমরা কোনো সময়সূচি পাইনি– কবের মধ্যে এটা বন্ধ করা হবে। তবে এটুকু বলতে পারি, আগামী বছর মার্চের মধ্যে এটা হবে।

“আর ৬ মাস... এখন এটা জানুয়ারিতে হবে না ফেব্রুয়ারিতে হবে, এটা আমি সঠিকভাবে বলতে পারব না। তবে মার্চের মধ্যে হবে- এটা আমি নিশ্চিত।”

১৯৪১ সালের ১১ অক্টোবর বাংলায় ১৫ মিনিটের সাপ্তাহিক সম্প্রচার শুরুর মধ্য দিয়ে যাত্রা করেছিল বিবিসি বাংলার রেডিও কার্যক্রম। পর্যায়ক্রমে সংবাদ সম্প্রচার শুরু হয় ১৯৬৫ সালে।

৮১ বছরের বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় রেডিওতে এখন ’সংবাদ ও দৈনন্দিন ঘটনাবলী’ নিয়ে ৩০ মিনিটের দুটি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে বিবিসি বাংলা। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ’প্রবাহ’ আর রাত সাড়ে ১০টায় ’পরিক্রমা’ এখনও শুনতে পান শ্রোতারা।

ইন্টারনেট, টেলিভিশন আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবরের ছড়াছড়ির মধ্যেও সন্ধ্যা বা রাতে বিবিসি বাংলার খবর শোনার অভ্যাসটা টিকিয়ে রেখেছিলেন সরাইলের ভূইশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার। সেই সম্প্রচার বন্ধের খবরে মন খারাপ তার।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বললেন, “প্রযুক্তিতো বদলে গেছে। রেডিও আর নাই বললেই চলে। এখন আর দরকারও পড়ে না। আমি যতটুকু পারছি, খবর শুনছি।… রিপোর্টগুলো আমার ভালো লাগে, উপস্থাপনা গোছানো হয়, তথ্যবহুল মনে হয়। এখন যদি বন্ধ হয়ে যায়, শোনা হবে না- স্বাভাবিকভাবে মনতো খারাপ হবেই।”

শ্রোতাদের মত সাবেক কর্মীদেরও মন খারাপ। তবে সময়ের বিবর্তনে রেডিও বন্ধ হয়ে যাওয়াকে নিয়তিই মানছেন তারা।

১৯৭৩ সালে হাতে লেখা বিবিসি বাংলার অনুষ্ঠানসূচি |ছবি: বিবিসি লাইভ
১৯৯৩-৯৪ সালে বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা এবং ১৯৯৫-২০০২ পর্যন্ত বিবিসি বাংলার জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রযোজনায় যুক্ত ছিলেন আফসান চৌধুরী।

তিনি বললেন, “আমার মনে হয়, বিবিসি মানুষের অনেক নিকটে পৌঁছেছিল। এখনকার গণমাধ্যম কতটা নিকটে পৌঁছেছে, আমি বলতে পারব না। দীর্ঘদিন ধরে এটা ঘটেছে। এটাতো একদিন, দুদিনে হয়নি।

“বিবিসিকে অনেকগুলি বৈতরণী পার হতে হয়েছে। ট্রাস্টের জায়গায় ছিল বিবিসি। বিবিসিতে কোনো খবর হলে মানুষ সেটাকে বিশ্বাস করত।”

বাংলাদেশের মানুষের কাছে বিবিসি বাংলার একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বও আছে। ষাটের দশকের শেষ থেকে একাত্তরের উত্তাল দিনগুলোতে এ দেশের মানুষের কাছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলতে ছিল বিবিসি। এবং সেইসব দিনে বিবিসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাই পালন করেছিল।

সে কথা তুলে ধরে আফসান চৌধুরী বলেন, “…তারা সবচেয়ে বেশি সংবাদ করেছিল এবং তাদের উপর সবচেয়ে বেশি আস্থাশীল ছিল মানুষ। কারণ তাদের বাংলা সার্ভিসটা ছিল। এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বাংলা সার্ভিসও ইংরেজি সার্ভিসের নিউজটা নিয়ে করত। কাজেই সবাই ওটা শুনেছে।”

অবশ্য তার পরেও বহু বছর বিবিসিকে খুব একটা প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হয়নি। পত্রিকা পৌঁছাত অনেক দেরিতে, টেলিভিশনের চল বেড়েছে আরও পরে। ইন্টারনেট বলে কিছু ছিলই না তখন, ফলে রেডিওই সবাই শুনত।

আশি বা নব্বইয়ের দশক পর্যন্তও যখনই দেশ কোনো রাজনৈতিক অস্থিরতা বা সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে গেছে, মানুষ যখন রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের ওপর আস্থা রাখতে পারেনি, তারা নব ঘুরিয়ে কান পেতেছেন বিবিসিতে।  

আফসান চৌধুরী বলেন, “এখনতো গত কয়েক বছরে যেটা হয়েছে যে, ইন্টারনেট প্রধান হয়ে গেছে। পত্রিকাতো এখন আর কেউ সেভাবে পড়ে না। এখন কনভার্জেন্ট মিডিয়ার কাল। সবকিছুই অনলাইনে পাওয়া যায়। তো, বিবিসিতেও এটা হয়েছে।

“বিবিসি সবসময় নির্ভরযোগ্য ছিল, কারণ এটা কোনো সরকারের অধিনস্ত ছিল না। দ্বিতীয়ত বিবিসিতে কোনো ওপিনিয়ন দিত না কেউ। আমাদের জন্য এটা সুবিধাজনক ছিল, ওপিনিয়ন দিতে হত না।”

বিবিসিতে যারা কাজ করেছেন, তারা যতটা স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করতে পেরেছেন, অন্যরা সে রকম সুযোগ পাননি বলেই আফসান চৌধুরীর ধারণা।

তিনি বলেন, “আমাদের ঘাড়ের উপর দিয়ে কেউ দাঁড়িয়ে থাকত না। এটাই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমার লন্ডনের এডিটর যদি বিশ্বাস করত আমাকে, তাহলেই হয়ে গেল। লন্ডনের এডিটর যে সবসময় বিশ্বাস করত তা নয়, কিন্তু সে যদি বিশ্বাস করত, সরকার আমাকে চাপ দিতে পারত না।

“খুব বড় একটা ডিসিপ্লিন ছিল, সেটা আমি শিখেছি। সেটা হচ্ছে ব্রডকাস্ট ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের উপরে যেন না যায়। তাহলে হত কী, অনেক বেশি শিখতে হত, খুব কম কথায় বেশি বলা যায় কি-না।”

তার মতে, মানুষের কাছাকাছি পৌঁছতে পারার কারণেই বিবিসি বাংলার সাংবাদিক ও উপস্থাপকদের নাম আর কণ্ঠ প্রত্যন্ত অঞ্চলেও শ্রোতাদের কাছেও অতি পরিচিত ছিল এক সময়।

“আমার একবার মনে আছে, তখন আমি বিবিসিতে নাই, আমি গ্রামের এক জায়গায় গেছি, আমাকে গ্রামের একটা মানুষ বললো যে, ‘আপনাকে আমরাতো চিনি’। জিজ্ঞেস করলাম, কীভাবে চেনেন? বললো, ‘আপনিতো বিবিসির…’।

বিবিসি বাংলার পথ পরিক্রমা

২০১৬ সালের পঁচাত্তর বছর পূর্তি উপলক্ষে বিবিসি বাংলা প্রকাশিত ‘বিবিসি লাইভ!’ প্রকাশনায় বাংলা সার্ভিসের পথ পরিক্রমা তুলে ধরা হয়েছে।

১৯৪১ সালের ১১ অক্টোবর বাংলায় ১৫ মিনিটের সাপ্তাহিক সম্প্রচার শুরু। ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক ও সাংবাদিক জর্জ অরওয়েল তখন ছিলেন বিবিসির বহির্দেশীয় বিভাগের ‘টকস প্রোডিউসার’, তিনি লিখতেন বার্তালিপি। আর সুধীন ঘোষ তা বাংলায় অনুবাদ করে সম্প্রচার করতেন।

১৯৪৪ সালের ২৩ জানুয়ারি থেকে সপ্তাহে দুটি করে ১৫ মিনিটের অনুষ্ঠান প্রচার শুরু।

১৯৪৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ১৫ মিনিটের দুটো অনুষ্ঠানের বদলে সপ্তাহে ৩০ মিনিটের একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান শুরু, নাম ছিল ‘বিচিত্রা’।

১৯৪৯ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে পূর্ব পাকিস্তানের শ্রোতাদের জন্য সপ্তাহে আলাদা ৩০ মিনিটের অনুষ্ঠান শুরু হয় ‘আঞ্জুমান’ নামে। অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে যুক্ত হয় নারীদের অনুষ্ঠান আর অধ্যাপক নুরুল মোমেনের পরিচালনায় ছোটদের জন্য ‘কাকলি’। বিচিত্রা থাকে ভারতীয় শ্রোতাদের জন্য।

১৯৫৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর থেকে আঞ্জুমান আর বিচিত্রা ছাড়া তৃতীয় একটি আধঘণ্টার সাপ্তাহিক অধিবেশন শুরু। বিষয় ছিল ব্রিটিশ পত্রিকায় উপমহাদেশ প্রসঙ্গ পর্যালোচনা ও ইংরেজি শেখার আসর।

১৯৬৫ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে দৈনিক ১৫ মিনিটের প্রভাতী অনুষ্ঠান শুরু; তাতে থাকত ১০ মিনিটের বিশ্ব সংবাদ এবং ৫ মিনিটের সংবাদভাষ্য।

১৯৬৯ সালের ১ জুন থেকে দুটি বাংলা অনুষ্ঠান একত্রিত হয়ে অভিন্ন বাংলা বিভাগ শুরু এবং প্রতি সন্ধ্যায় ১৫ মিনিটের অনুষ্ঠান শুরু ‘প্রবাহ’ নামে।

১৯৯৪ সালে ঢাকায় এফ এম সম্প্রচার শুরু এবং সন্ধ্যেবেলা ৪০ মিনিটের প্রবাহের পর শুধু ১০০ এফএম-এ ২০ মিনিটের বাড়তি অনুষ্ঠান চালু।

১৯৯৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে দুপুরবেলা আধাঘণ্টার অনুষ্ঠান শুরু।

১৯৯৭ সালে বিবিসি বাংলা বিভাগের প্রথম বাঙালি বিভাগীয় প্রধান হন সৈয়দ মাহমুদ আলী।

২০০৩ সালে বন্ধ হয়ে যায় দুপুরের অধিবেশন।

২০০৫ সালে চালু হয় বিবিসির বাংলা ওয়েবসাইট।

২০০৫ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ সংলাপ নামে একটি আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হয়।

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি শুরু হয় সকালের দ্বিতীয় আধঘণ্টার অধিবেশন প্রত্যুষা।

২০০৮ সালের মার্চে এফএম সম্প্রচার সম্প্রসারিত হয় খুলনা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর ও কুমিল্লায়।

২০১১ সালের মার্চে সকালের দুটো অধিবেশন প্রভাতী ও প্রত্যুষা লন্ডন থেকে ঢাকা স্টুডিওতে স্থানান্তর করা হয়।

২০১৪ সালের জানুয়ারিতে এফএম সম্প্রচার যায় বরিশাল, কক্সবাজার ও ঠাকুরগাঁওয়ে। অর্থাৎ ঢাকার বাইরে এফএম সম্প্রচারের পরিধি বিস্তৃত হয় নয়টি শহরে।

২০১৫ সালের এপ্রিলে সাপ্তাহিক টিভি অনুষ্ঠান ‘বিবিসি প্রবাহ’ সম্প্রচারের জন্য চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে বিবিসি।  

২০১৫ সালের ১১ জুন: বিবিসি প্রবাহ টিভি শুরু

বাজারের নাম যখন ‘বিবিসি’

সন্ধ্যায় গ্রামের চায়ের দোকানে কিংবা পাড়া-মহল্লার কোনো কোনো ঘরে জড়ো হয়ে রেডিওতে বিবিসির খবর শোনার দৃশ্য একসময় ছিল খুবই পরিচিত ।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের খবর পেতে বিবিসি শোনার জন্য মানুষের একত্রিত হওয়ার অভ্যস্ততায় পাবনার পাকশীতে একটি বাজারের নামই হয়ে যায় ‘বিবিসি বাজার’।

পাকশী ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলম শুনিয়েছেন একটি চায়ের দোকান থেকে বিবিসি বাজার হয়ে ওঠার গল্প।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সে সময় বেশিরভাগ ১ ব্যান্ডের রেডিও ছিল। সেগুলোতে বিবিসি শোনা যেত না। কিন্তু কাশেম মোল্লার কাছে ছিল ফিলিপসের ৩ ব্যান্ডের রেডিও।

“সেটা উনি দোকানে বাজাতেন। মানুষ বলত, ‘চলো যাই বিবিসি শুনে আসি, চলো যাই বিবিসি শুনে আসি’- এভাবে বলতে বলতে বাজারের নাম ’বিবিসি বাজার’ হয়ে যায়।”

ওই সময়ের স্মৃতিচারণ করে জাহাঙ্গীর বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের শুরুর সময়টাতে বর্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় চারিদিকে ছিল পানি। আর কাশেম মোল্লার দোকানটা ছিল রাস্তার উপরে, একটু উঁচুতে। মানুষ অনেক দূর থেকে নৌকায় করে খবর শুনতে আসত।”

সুযোগ পেলে রনাঙ্গন থেকে পাকিস্তান বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারাও সন্ধ্যায় বিবিসি শোনার জন্য ওই বাজারমুখী হতেন বলে জানান জাহাঙ্গীর।

“বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকা আর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শুনত মানুষ। কিন্তু বিবিসি সবসময় নিরপেক্ষ খবর দিত আর উপস্থাপনাও ছিল সুন্দর। এ কারণে আমরা বিবিসি বেশি পছন্দ করতাম।”

উপস্থাপনার আলাদা ভঙ্গি আর সংবাদ ও বিশ্লেষণ অনেকটা বস্তুনিষ্ঠ মনে হওয়ায় এখনও বিবিসি বাংলা শোনেন সংবাদকর্মী পিন্টু রঞ্জন অর্ক।

বিবিসির রেডিওর প্রতি নিজের ভালো লাগার কথা বলতে গিয়ে মানুষের জীবনের সাথে এ প্রতিষ্ঠানের জড়িয়ে যাওয়ার কথাও তিনি বলেন।

“অনেক সময় দেখা যায়, কারও কাছে তথ্য বেশি থাকলে বা কেউ মানুষের কাছে নিজ থেকে বিভিন্ন তথ্য ছড়িয়ে দিতে থাকলে তাকে ’বিবিসি’ নামে ডাকা হচ্ছে।

“হয়ত দেখা যায়, সেই তথ্য তেমন গুরুত্বপূর্ণ না, কিন্তু তিনি মানুষকে বলে বেড়াচ্ছেন। অনেক সময় ব্যঙ্গাত্মকভাবেও বলা হচ্ছে বিবিসি। এভাবে নাম দেওয়ার পেছনে হাসিঠাট্টার ব্যাপার থাকলেও বিবিসির মানুষের মনের কাছাকাছি জায়গা করে নেওয়ার বিষয়ই প্রমাণ করে।”

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article