উড়ো চিঠি নিয়ে রাসিক ও শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে বিভ্রান্তি!

  জেলা প্রতিনিধি
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:৫১, শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১৫ আশ্বিন ১৪২৯
ফাইল ফটো
ফাইল ফটো
  • কিছুদিন আগে বোর্ড চেয়ারম্যানের নামে কে বা কারা একটি উড়ো চিঠি রাসিক মেয়রকে দেন
  • এ চিঠির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মেয়রের দফতর বোর্ড চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পালটা চিঠি দিয়েছে

একটি উড়ো চিঠিকে কেন্দ্রে করে রাজশাহী সিটি করপোরেশন এবং শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। কিছুদিন আগে বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের নামে কে বা কারা একটি উড়ো চিঠি রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে দেন।

মেয়র লিটন বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ না করার বিষয়টি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এ নিয়ে চিঠি চালাচালির ঘটনাও ঘটেছে।  

রাজশাহী বোর্ড চেয়ারম্যান বলেছেন, এ ধরনের কোনো চিঠি তিনি মেয়র সাহেবকে পাঠাননি বা দেননি। চিঠিটি ভুয়া। তৃতীয় কোনো পক্ষ মেয়র সাহেবের সঙ্গে শিক্ষা বোর্ডের সম্পর্ককে তিক্ত করে তুলতেই এ ধরনের জাল চিঠি ছেড়েছেন।

বোর্ড চেয়ারম্যান আরও বলেন, চিঠিটিতে মেয়রকে উদ্দেশ্য করে যা লেখা হয়েছে তা কোনো ব্যক্তি দেখলেই বুঝতে পারবেন এটি তৃতীয় কোনো পক্ষের কাজ। কোনো বোর্ড চেয়ারম্যান মেয়রকে এ ধরনের চিঠি দিতেই পারেন না। আমিও দেইনি।

জানা গেছে, এ চিঠির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মেয়রের দফতর বোর্ড চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পালটা চিঠি দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় বোর্ড চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের চিঠিতে লেখা হয়েছে- ‘আপনার সঙ্গে আমাকে দেখা করার জন্য গেটে অপেক্ষা করতে হবে! আপনার কাছে সময় চাইতে হবে? বিষয়টি কল্পনা করা আমার জন্য দুরূহ। আপনি জানেন কি আমার জা-শাশুড়ি এমপি। আওয়ামী পরিবারে আমার জন্ম। ভবিষ্যতে আমিও এমপি বা মন্ত্রী হতে পারি। গাজীপুর ও কাটাখালীর মেয়রের দিকে তাকান। বর্তমানে তাদের কী অবস্থা?’

গত ১৮ জুলাই ওই চিঠিটি মেয়রের দফতরে ডাকযোগে পৌঁছায়। এরপর সিটি করপোরেশন থেকে চিঠিটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম গত ২৪ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আরেকটি চিঠি পাঠান।

এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চশিক্ষা বিভাগের শৃঙ্খলা বিষয়ক শাখার উপসচিব মোহাম্মদ আবু নাসের বেগের স্বাক্ষরে গত ২২ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে এ বিষয়ে ১০ দিনের মধ্যে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের কাছে ব্যাখ্যা চান। শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ইতোমধ্যে ভুয়া এ চিঠির বিষয়ে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।

এর আগে গত ২৬ জুলাই তিনি একটি চিঠি দিয়ে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনকেও ভুয়া চিঠির বিষয়টি অবহিত করেছেন এবং তদন্ত করার অনুরোধ করেন।

চেয়ারম্যানের চিঠিতে বলা হয়- শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের অনুরূপ (জাল/স্ক্যান) স্বাক্ষরে একটি আপত্তিকর পত্র রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়রের কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের কোনো স্মারক নম্বর ব্যবহার করা হয়নি। চিঠিটি উপশহর পোস্ট অফিস থেকে পোস্ট করা হয়েছে, যা মেয়রের দফতর থেকে বোর্ড চেয়ারম্যান জেনেছেন। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সমস্ত অফিসিয়াল চিঠি বোর্ড সংলগ্ন জিপিও-৬০০০ থেকে পোস্ট করা হয়। চিঠিটিতে যে ধরনের প্যাড এবং ফরম্যাট ব্যবহার করা হয়েছে তা রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের কোনো দাফতরিক পত্রে ব্যবহার করা হয় না। মেয়রের কাছে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান সম্পর্কে বিভ্রান্তি তৈরির জন্য কে বা কারা এই স্মারকবিহীন পত্রটি উপশহর পোস্ট অফিসে পোস্ট করেছেন, বিষয়টি নিয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড বিব্রত এবং তা তদন্তের দাবি করেন। ওই চিঠির সঙ্গে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের কোনোরূপ সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানানো হয়।

এ বিষয়ে রাসিক মেয়রের দফতরের কোনো প্রতিক্রিয়া জানা না গেলেও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, কোনো বোর্ড চেয়ারম্যান তো দূরের কথা, কোনো সাধারণ মানুষও মেয়রকে এ ধরনের চিঠি দিতে পারেন না। তৃতীয় কোনো পক্ষ এখানে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করেছে। শিক্ষা বোর্ডেরই কোনো চক্র এ ধরনের অপকর্মে জড়িত থাকতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা করেন। 

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article