রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাঠানোয় ভূমিকা ছিলো ফেসবুকের!
একই সময়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের ছবি ব্যবপকহারে ছড়িয়ে পড়ে। যার অনেকগুলো ছিলো গুজব। জেমসটাউন ম্যাসাকার, তিব্বতী বৌদ্ধদের গায়ে অগ্নিসংযোগ সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নির্যাতনের ছবি রোহিঙ্গাদের ছবি বলে প্রচার পায়। ফলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও তাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি ব্যপক চাপ প্রয়োগ করা হয়।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যখন বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ছড়ানো হচ্ছিল তখন এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি ফেসবুক। এমনকি বিদ্বেষপূর্ণ পোস্টগুলোর বিরুদ্ধে রিপোর্ট করলেও তা কোন কাজে আসেনি বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
২৯ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে ফেসবুকের অ্যালগরিদম দ্বারা ব্যপকভাবে উগ্রপন্থী বিষয়বস্তু ছড়ানো হয়েছিলো। এতে সামাজিকভাবে একধরনের চাপ সৃষ্টি হয় এবং যার প্রেক্ষিতে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বৃদ্ধি করে মিয়ানমার সেনারা।
গতবছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা শরণার্থী ১৫০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অ্যামনেস্টির এই প্রতিবেদনে সেই ক্ষতিপূরন দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করা হয়। আরো বলা হয়, সে সময়ে মিয়ানমারের অন্তত দুই কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে উস্কানী দেয়া হয়। মিয়ানমার থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হয়, যার পেছনে বড় ভূমিকা রাখে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বেপরোয়া বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য।
উল্লেখ্য একই সময়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের ছবি ব্যবপকহারে ছড়িয়ে পড়ে। যার অনেকগুলো ছিলো গুজব। জেমসটাউন ম্যাসাকার, তিব্বতী বৌদ্ধদের গায়ে অগ্নিসংযোগ সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নির্যাতনের ছবি রোহিঙ্গাদের ছবি বলে প্রচার পায়। ফলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও তাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি ব্যপক চাপ প্রয়োগ করা হয়।
প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি বলেছে, অনেক রোহিঙ্গা ফেসবুকের ‘রিপোর্ট’ ফাংশনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাবিরোধী বিষয়বস্তু রিপোর্ট করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। বিদ্বেষপূর্ণ এসব বক্তব্যকে মিয়ানমারে বিপুলসংখ্যক দর্শকের কাছে ছড়িয়ে দিতে এবং পৌঁছানোর সুযোগ করে দিয়েছে ফেসবুক।
২০২১ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত সাড়া জাগানো ‘ফেসবুক পেপারস’-এ ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, কোম্পানির নির্বাহীরা জানতেন সাইটটি জাতিগত সংখ্যালঘু ও অন্যান্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্ষতিকর বিষয়বস্তু ছড়াতে ভূমিকা রেখেছে।