কক্ষপথ থেকে গ্রহাণু সরিয়ে দিতে সফল হলো নাসা
প্রথম চেষ্টাতেই একটি গ্রহাণুকে তার কক্ষপথ থেকে সরিয়ে দিতে সফল হলো যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। মহাজাগতিক শিলাখণ্ডের উপর মহাকাশযান আছড়ে ফেলে এ যুগান্তকারী ফলাফল পাওয়া গিয়েছে। খবর এপি।
গতকাল সোমবারের ওই অভিযানের সময় পৃথিবী থেকে ৭০ লাখ মাইল দূরে ছিল ডিমরফস নামের গ্রহাণুটি। নাসার ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডায়রেকশন টেস্ট (ডার্ট) মহাকাশযান এর উপর আছড়ে পড়ে।
পৃথিবীকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে এমন গ্রহাণুকে নিরাপদে পথ থেকে সরিয়ে দেওয়া যায় কিনা পরীক্ষা করার জন্য এ অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এর অংশ হিসেবে ১০ মাস আগে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে যাত্রা করে ডার্ট। এতে খরচ হয়েছে সাড়ে ৩২ কোটি ডলার।
এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে নাসা বলছে, মহাকাশ বিজ্ঞানে নতুন যুগের সূচনা হলো। গ্রহাণু আছড়ে পড়ার বিপদ থেকে নিজেদের রক্ষা করার সক্ষমতা অর্জন করেছি আমরা।
ডিমরফস চাওড়ায় প্রায় ১৬০ মিটার। মিশরের বড় পিরামিডগুলোর সঙ্গে তুলনাযোগ্য গ্রহাণুটি ডিডিমস নামের আধ মাইল বিস্তৃত আরেকটি গ্রহাণুকে ঘিরে চক্কর দেয়। ডার্ট ঘণ্টায় ১৪ হাজার মাইল গতিতে ডিমরফসের উপর আছড়ে পড়ে। এর প্রতিক্রিয়ায় ডিডিমসের চারপাশে চক্কর দেয়ার সময় কমে এসেছে।
ডিমরফস ও ডিডিমস দুটি গ্রহাণুই প্রতি চার বছর অন্তর সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে। এরা পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকর না হলেও নাসার প্রজেক্টটি ছিল পরীক্ষামূলক।
গ্রহাণু দুটি ‘নিয়ার আর্থ অবজেক্টস’ গোষ্ঠীর মধ্যে পড়ে। পৃথিবীর চারপাশে ৩ কোটি মাইলের মধ্যে কোনো মহাজাগতিক পদার্থ চলে এলেই তাকে এই গোষ্ঠীতে ফেলা হয়। এ পরীক্ষার মাধ্যমে বোঝা গেল, সত্যিকারের বিপদ এলে মানুষ তা মোকাবেলা করতে পারবে। ধারণা করা হয়, কোটি কোটি বছর আগে ডাইনোসরের বিলুপ্তির পেছনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছিল পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়া গ্রহাণু। তবে আগামী এক শতকেও পৃথিবীর সামনে এমন কিছু আসবে না বলে বিজ্ঞানীরা পূর্বাভাস দিয়েছে।
নাসা জানিয়েছে, ডার্টের সঙ্গে লিসিয়াকিউব নামের একটি কৃত্রিম উপগ্রহও মহাকাশে পাঠানো হয়েছে। ডার্ট গ্রহাণুর উপর আছড়ে পড়ার ঠিক আগ মুহূর্তে লিসিয়াকিউব আলাদা হয়ে যায়। আগামী কয়েক মাস গ্রহাণু দুটির সম্পর্কে তথ্য পাঠাবে উপগ্রহটি।