পুঁজিবাজার কারসাজিতে সাকিবের ১ কোটি ৪ লাখ শেয়ার

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১১:৪৩, বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৩১ ভাদ্র ১৪২৯

পুঁজিবাজার কারসাজিতে জড়িতদের সঙ্গে নাম এসেছে ক্রিকেটে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। ওয়ান ব্যাংক, ফরচুন সুজ ও এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে কারসাজির ঘটনায় সাকিবের নাম পেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তদন্ত কমিটি। শুধু সাকিবের নামেই এক কোটি চার লাখ শেয়ার লেনদেনের হিসাব মিলেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে।

তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের শীর্ষ ১৫ ক্রেতার তালিকার ৮ নম্বরে রয়েছে সাকিবের নাম। একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭৫ লাখের বেশি শেয়ার কিনে ১০ লাখ ২০ হাজার শেয়ার বিক্রি করেন তিনি। ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত কারসাজির মাধ্যমে ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়াতে ভূমিকা রাখে সাকিব ও তার মালিকানাধীন মোনার্ক হোল্ডিংস। - কালেরকণ্ঠ

পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) শুভেচ্ছাদূত সাকিব। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মোনার্ক হোল্ডিংস নামের এক ব্রোকারেজ হাউসের অনুমোদন নেন তিনি। মোনার্ক হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান সাকিব আল হাসান। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে আছেন শেয়ার কারসাজির জন্য শাস্তি পাওয়া আবুল খায়ের হিরোর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান। পরিচালক হিসেবে জাভেদ এ মতিন ও আবুল কালাম মাতবরের নাম রয়েছে।

ওয়ান ব্যাংকের কারসাজির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আবুল খায়ের হিরোর বাবা আবুল কালাম মাতবরকে জরিমানা করে গত ২ আগস্ট আদেশ দেয় বিএসইসি। সে আদেশ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তদন্তের সময়ে শীর্ষ শেয়ার কেনাবেচাকারীর নামের তালিকায় সাকিব ও মোনার্ক হোল্ডিংসের সংশ্লিষ্টতা ছিল। এই কারসাজির মূল অভিযুক্ত সমবায় অধিদপ্তরের উপরেজিস্ট্রার আবুল খায়ের হিরো। সাকিবের শেয়ার লেনদেনের বিষয়টি তদারক করেন হিরো নিজেই।

ডিএসইর তদন্তে অস্বাভাবিক এই কেনাবেচাকে ‘সিরিজ লেনদেন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সিকিউরিটিজ আইনে যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ জন্য আবুল খায়ের হিরো ও তার স্ত্রী, বাবা এবং তার সহযোগী ডিআইটি কো-অপারেটিভ লিমিটেডকে তিন কোটি ৫৫ লাখ টাকা জরিমানা করে বিএসইসি।

ডিএসইর তদন্তে দেখা যায়, বিডিকম অনলাইনের কারসাজির ঘটনায়ও শীর্ষ ক্রেতার তালিকায় ছিল সাকিবের প্রতিষ্ঠান মোনার্ক হোল্ডিংস।

এ ছাড়া ফরচুন সুজের শেয়ার কারসাজির ঘটনায় ডিএসইর গত বছরের ২০ মে থেকে ১৭ জুনের করা তদন্তের সময়ে শীর্ষ ২০ ক্রেতার তালিকার ১০ নম্বরে সাকিবের নাম। এ ঘটনায় স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের মালিকানাধীন এসবিএল ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টে খোলা সাকিবের বিও অ্যাকাউন্ট থেকে ফরচুন সুজের দুই লাখ শেয়ার কেনা হয়।

এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার কারসাজির ঘটনায় ডিএসইতে তদন্তে গত বছরের ৫ থেকে ২৪ মে পর্যন্ত সময়ে এ ব্যাংকটির শীর্ষ ২০ ক্রেতার তালিকার ১১ নম্বরে আছে সাকিবের নাম। এ কারসাজিকে ইস্টার্ন ব্যাংকের মালিকানাধীন ইবিএল সিকিউরিটিতে খোলা বিও অ্যাকাউন্টে ২৭ লাখ শেয়ার কিনে এক লাখ শেয়ার বিক্রির তথ্য মিলেছে। এ ছাড়া বিডিকম অনলাইনের কারসাজির ঘটনায় সাকিবের মোনার্ক হোল্ডিংসের নাম এসেছে শীর্ষ ক্রেতার তালিকায়।

বর্তমানে ক্যারিবীয় প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ খেলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অবস্থান করছেন সাকিব। ফলে চেষ্টা করেও তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তবে মিরপুর বিসিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাকিবের শেয়ার কারসাজি নিয়ে জানতে চাইলে নাজমুল হাসান পাপন সংবাদিকদের বলেন, এটা ক্রিকেটের বিষয় নয়। এ নিয়ে কিছু বলার নেই।

Share This Article