হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বাংলা বাদ কেন: প্রশ্ন মমতার
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে হাসিনাজি এসেছেন । ওর সঙ্গে, ওদের সবার সঙ্গে বরাবর আমার সম্পর্ক ভালো। পূজায় চিঠি দিয়ে শাড়ি পাঠায়। আমিও আম পাঠাই । হাসিনাজি আম, ইলিশ পাঠান । আমাদের এমনই সম্পর্ক । হাসিনাজি নিজে দেখা করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। কিন্তু এই প্রথম দেখলাম, বাংলাদেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী এসেছেন ভারতে আর বাংলা বাদ।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে এসেছেন, কিন্তু তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেয়া হয়নি বলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই প্রথম দেখলাম, বাংলাদেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী এসেছেন ভারতে, আর বাংলা বাদ।’
বৃহস্পতিবার কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতিতে তৃণমূলের বুথ স্তরের প্রতিনিধি থেকে শুরু করে ব্লক সভাপতি, জেলা সভাপতি, বিধায়ক, সাংসদ, নেতানেত্রীদের নিয়ে একটি বিশাল সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেখানে বক্তৃতায় কেন্দ্র নানাভাবে বাংলাকে অপমান করছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী ।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের কথা উল্লেখ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে বলতে চাই না । কিন্তু নিজে দেখুন, বাংলাদেশ থেকে হাসিনাজি এসেছেন । ওর সঙ্গে, ওদের সবার সঙ্গে বরাবর আমার সম্পর্ক ভালো। পূজায় চিঠি দিয়ে শাড়ি পাঠায়। আমিও আম পাঠাই । হাসিনাজি আম, ইলিশ পাঠান । আমাদের এমনই সম্পর্ক । হাসিনাজি নিজে দেখা করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। কিন্তু এই প্রথম দেখলাম, বাংলাদেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী এসেছেন ভারতে আর বাংলা বাদ।’
মমতা আরও বলেন, ‘আমি একটা সংবাদমাধ্যমে হাসিনাজির বক্তব্য শুনলাম। আমি কৃতজ্ঞ হাসিনাজি দেখা করতে চেয়েছিলেন । যাই হোক, দেশের ব্যাপার বেশি বলতে চাই না।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে দিল্লিতে মমতা-হাসিনার সাক্ষাৎ নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের মানুষের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদমাধ্যমে জানান, ‘মমতা আমার বোনের মতো এবং আমরা যেকোনো সময় দেখা করতে পারি। কিছু সম্পর্ক রাজনীতির ঊর্ধ্বে হয়, ব্যক্তিগত। যেমন গান্ধী পরিবারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক।’
৫ সেপ্টেম্বর ৪ দিনের ভারত সফরে আসেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সাতটি বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে । এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন। কিন্তু তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ২০১১ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে আটকে রয়েছে।
বাংলাদেশ ২০১২ সাল থেকে ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে । তবে ভারতের, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের অনুরোধে দুর্গা পূজার মৌসুমে উপহার হিসেবে কিছু ইলিশ ভারতে রপ্তানি করে বাংলাদেশ। সেই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে বার্তা দিয়ে হাসতে হাসতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিস্তার পানি না দিলে, ইলিশ দেব না।’