চীন থেকে তারা পড়তে এসেছেন বাংলাদেশে

  অনলাইন ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৫:৪০, শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০২২, ৫ ভাদ্র ১৪২৯

প্রায় বছরখানেক বাংলাদেশে এসেছি পড়াশোনার জন্য। ভর্তি হয়েছি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। এ দেশে পড়াশোনা করতে এসে সবচেয়ে ভালো লেগেছে যে জিনিসটি, তা হলো এ দেশের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদানের প্রতি নির্ভরতা।

 এখানে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে আসে, মনোযোগ দিয়ে ক্লাস লেকচার শোনে। এসবের প্রচলন আমাদের দেশে অনেকটাই কম। আরেকটি যে জিনিসের প্রতি আগ্রহ জন্মেছে, তা হলো বাংলা ভাষা ও বাংলার সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা এবং সেটি ধারণ করার। ইতোমধ্যে অল্প বাংলা বলা ও লেখা শিখেছি। আরও শেখার চেষ্টা চলছে। জানতে চাই এ দেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়েও। ভবিষ্যতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে বাংলাদেশে চলমান কোনো চীনা প্রকল্প বা কোম্পানিতে চাকরি করতে চাই। সব মিলিয়ে এ দেশেই থেকে যাওয়ার ইচ্ছা আছে।

বাংলাদেশের প্রকৃতিও আমার ভালো লাগে। এ দেশ কৃষিপ্রধান। আমার বাবাও পেশায় কৃষক। তাই কৃষিপ্রধান বাংলাদেশকে আপন মনে হয়। তবে কিছু সমস্যাও রয়েছে এ দেশে। বিশেষত এখানকার রাস্তাঘাট অনেক সরু। ঢাকা শহরে শব্দদূষণ ও ময়লার স্তূপের জন্য শহুরে পরিবেশটি অনেক সময় বেশ বিরক্তিকর লাগে। আশা করি, এসব সমস্যা উতরে এক সময় আরও অনেক এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। সবকিছু মিলিয়েই এ দেশকে আপন করে নিতে চাই।

কৃষিপ্রধান বাংলাদেশকে আপন মনে হয়
ম্যাক্স লিন, শিক্ষার্থী
ইংরেজি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকৃতির অনন্য আশীর্বাদ হলো এই বাংলাদেশ। এ দেশে পড়তে আসার পেছনে অন্যতম কারণও ছিল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। তা ছাড়া বাংলাদেশ-চীন বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং এ দেশে চীনের নানা ধরনের প্রকল্প চলমান থাকার বিষয়টিও এখানকার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছিল। প্রায় বছর হতে চলল এখানে আছি। সব মিলিয়ে এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান পদ্ধতি ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীর চমৎকার সম্পর্কের বিষয়টি আমাকে মোহিত করেছে। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীরা অনেক বন্ধুবৎসল। এমন বন্ধুবৎসল পরিবেশ হয়তো পৃথিবীর অন্য কোথাও পাওয়া যাবে না। এ দেশে পড়তে আসার পর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করেছি। সবচেয়ে সুন্দর লেগেছে কক্সবাজার ভ্রমণের অনুভূতি। সমুদ্র আর পাহাড়ে ঘেরা ওই অঞ্চলটি যেন প্রকৃতির অপার দান। অনেক কিছু উপভোগ করেছি কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে।

আগামীতে পরিকল্পনা আছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভ্রমণে যাওয়ার। বিশেষত শিগগিরই সাজেক যেতে চাই। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এ দেশের প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও ভাষাকে ভালোবেসে থেকে যেতে চাই এ দেশেই। বাংলা ভাষা অনেকটা শিখেও ফেলেছি। আরও শেখার চেষ্টা চলছে। পরিশেষে বলব, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে এটিও ঠিক, তবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ এসব সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠবে বলে প্রত্যাশা রাখছি।

সহপাঠীরা অনেক বেশি বন্ধুবৎসল
ডোরকাস মা, শিক্ষার্থী
ইংরেজি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

Share This Article