‘মিট এ্যান্ড গ্রিট এক্সক্লুসিভ’-এ সাকিব ও শাকিব
‘সাফল্যের শীর্ষে আরোহণে কঠোর অধ্যাবসায়ের সাথে কপালও লাগে’
বাংলাদেশ ক্রিকেটের বরপুত্র সাকিব আল হাসান এবং ঢাকাই সিনেমার ‘কিং’ শাকিব খান অভিন্ন ভাষায় পরম করুণাময়ের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বললেন যে, ‘আজকের পর্যায়ে উপনীত হতে কঠিন অধ্যাবসায়, নিরলস প্রচেষ্টার সাথে যোগ হয়েছে ভাগ্য, কপাল। আল্লাহ তাআলার করুণা ছাড়া কিছুই সম্ভব হতো না।’
বাঙালি জাতির গৌরবের প্রতীক এই দুই সুপারস্টারকে নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির ওয়ার্ল্ডফেয়ার মেরিনার আলো ঝলমল মিলনায়তনে ‘মিট এ্যান্ড গ্রিট এক্সক্লুসিভ’ শীর্ষক মনোজ্ঞ এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন শো টাইম মিউজিক’র আলমগীর খান আলম। কোন ভূমিকা ছাড়াই দুই রাজাধিরাজকে মঞ্চে আলিশান চেয়ারে বসার আহ্বান জানান আলমগীর খান।
এরপর শাকিব খান এবং সাকিব আল হাসানের পাশে দু’জন করে বসেন এবং তারা সরাসরি উভয়ের মতামত/মন্তব্য জানতে চান নানা ইস্যুতে। এক পর্যায়ে আসেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলাজি’র চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপ। তিনি শাকিব এবং সাকিবকে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে জানতে চাইলেন, ‘নিজ নিজ ক্ষেত্রে আপনারা উভয়ে শীর্ষে আরোহন করেছেন। কঠোর অধ্যাবসায়ের পাশাপাশি আর কোন বিষয়টি আপনাদের সুপারস্টারে পরিগণিত করেছে বলে মনে করেন?’
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বললেন, ‘পরিশ্রম তো করতে হয়েছে এবং এখনো করছি। এরকম পরিশ্রম অনেকেই করেন। কিন্তু সবাই তো হতে পারেন না। এজন্যে কপাল লাগে। মাশাআল্লাহ আমার কপাল বড়, সেটি বড় একটি ব্যাপার।’
সুপারস্টার শাকিব খান বলেন, ‘ভাগ্য লাগে। সেটি নির্ধারণ করেন আল্লাহ তাআলা। এটাই বড় সত্য। আমি চেষ্টা করে আসছি। এই চেষ্টা জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠতে সহায়তা করে অনেককেই। আমার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে ভাগ্য প্রসন্ন হয়েছে এবং সেটি পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার দান।’
চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপের অপর এক কৌতূহলের জবাবে সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আমি বাস্তববাদী মানুষ। বর্তমান নিয়েই ব্যস্ত থাকি। তাই মারা যাওয়ার পর কে কী ভাবলেন সেটি তো আমি জানতে পারবো না। তবে আমি জানি যারা একান্তই কাছের মানুষ তারা স্মরণ করবেন, দোয়া করবেন। আর যদি সমগ্র জাতির কল্যাণে কিছু করছি বলে বিবেকসম্পন্নরা অনুধাবনে সক্ষম হন, তাহলে তারাও স্মরণ রাখবেন বহুদিন।’
ইউএস সুপ্রিম কোর্টে প্রথম বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাটর্নি এবং কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট ডেমক্রেটিক পার্টির লিডার মঈন চৌধুরীর কৌতূহলের জবাবে সাকিব ও শাকিব বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের চিন্তা যখন করবেন, তখন নিশ্চয়ই ইমিগ্রেশনের অ্যাটর্নি হিসেবে তার (মঈন চৌধুরী) স্মরণাপন্ন হবেন।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেটের প্রসারে কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে ক্রিকেটার সাকিব বলেন, ‘অবশ্যই করার ইচ্ছা আছে। নতুন প্রজন্মে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে ক্রিকেটের প্রতি। সেই আবেগ কাজে লাগাতে সচেষ্ট রয়েছেন সকলেই।’
মার্কিন মূলধারার চলচ্চিত্রে প্রতিভাধরদের নিয়ে সম্পৃক্ততার কোনো চিন্তা-ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে ঢালিউডের কিং শাকিব বলেন, ‘বাংলাদেশিসহ এশিয়ানদের মেধা এবং প্রতিভা অত্যন্ত প্রখর-এটি মার্কিন মুল্লুকের বিদগ্ধজনেরা ইতিমধ্যেই উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন। এ আর রহমান, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এর অন্যতম উদাহরণ। নিশ্চয়ই আমরাও একই অবস্থানে উঠতে সক্ষম হবো। এজন্যে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।’
উত্তর আমেরিকায় বাংলা সংস্কৃতির বিকাশে নিরন্তরভাবে কর্মরত শো-টাইম মিউজিকের উদ্যোগে কয়েক মাস আগে নিউইয়র্কে প্রথমবারের মতো দুই কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা এবং সাবিনা ইয়াসমীন একই মঞ্চে গেয়েছেন। এরপর এই দুই সুপারস্টারকেও একই মঞ্চে প্রাণবন্ত মতবিনিময়ে হাজির করার মধ্যদিয়ে কম্যুনিটিতে অনন্য এক উদাহরণ সৃষ্টি করলেন আলমগীর খান আলম।
এই আলাপচারিতায় বিশিষ্টজনদের মধ্যে আরও ছিলেন বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম পৃষ্ঠপোষক নুরুল আজিম, রাহাত মুক্তাদির, রায়হান জামান, ডা. চৌধুরী সারওয়ার হাসান, ফাহাদ সোলায়মান, মোহাম্মদ এ কে আজাদ, শাহনেওয়াজ, রানু নাওয়াজ প্রমুখ। আরও ছিলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রিয় নাম ‘প্রিসিলা নিউইয়র্ক’ তথা প্রিসিলা ফাতেমা।