কালো টাকা সাদা করন: অনৈতিক হলেও লাভজনক!
এবারের বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখেছেন বলে জানিয়েছেন। এ প্রক্রিয়ায় মাত্র ৭ থেকে ১৫ শতাংশ কর দিয়েই বিদেশের পাচার হওয়া বিপুল পরিমান টাকা দেশে আনা যাবে। সরকার তার আয়ের উৎস সম্পর্কে তাকে কিছু জিজ্ঞাস করবে না।
তবে এর বিরোধীতাও করেছেন অনেকে। দেশের বুদ্ধিজীবী, অর্থনীতিবিদসহ অনেকেই এর সমালোচনা করছেন।
অর্থনীতিবিদ সেলিম রায়হান একে দেখছেন টাকা পাচারের ‘এক ধরনের স্বীকৃতি’হিসেবে। সিপিডির মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, এ প্রস্তাব নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়, অর্থনৈতিকভাবে যৌক্তিক নয় এবং রাজনৈতিকভাবেও জনগণের কাছে উপস্থাপনযোগ্য নয়।
তবে কেউ কেউ বলছেন, নৈতিকভাবে ঠিক না হলেও অর্থনীতির জন্য এটি ভালো পদক্ষেপ।
এদিকে অর্থমন্ত্রী বলছেন, পাচার হওয়া টাকায় দেশের ‘মানুষের হক রয়েছে, এই হক তিনি ফিরিয়ে আনতে চান। আর সুযোগ পেলে কালো টাকার মালিকরা বিদেশের সম্পদ ও টাকা দেশে ফিরিয়ে আনবেন বলেই তার বিশ্বাস।
অর্থমন্ত্রীর হিসেবে শুধু টাকা নয়, বিদেশে থাকা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তিও দেশে সরকারের খাতায় বৈধ আয়ের তালিকায় যুক্ত করা যাবে। ওই আয়ের উৎস জানতে চাওয়া হবে না।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ৬ লাখ কোটি টাকার যেই বিশাল বাজেট তিনি দিয়েছেন, সেই বাজেটের ব্যয় মেটানোর জন্য পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনা জরুরি। শুধু তাই নয়, বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে আগামী অর্থবছর সংকটে কাটবে বলে আশঙ্কা করেছেন অর্থমন্ত্রী। সে হিসেবে এটি হতে পারে সরকারের একটি বড়ো অর্থের যোগানক্ষেত্র। যে কারণে অর্থমন্ত্রী একে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
কিন্তু এটি অর্থপাচারকেই স্বীকৃতি দিচ্ছে কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, যদি বাধা দিই, তবে কোন টাকাই আসবে না। যদি না আসে আমাদের লাভটা কী? তার চেয়ে যাই আসে সেটাই লাভ।
তিনি আরো বলেন, বিশ্বের অন্তত ১৭টা দেশ অ্যামনেস্টি (সাধারণ ক্ষমা) দিয়ে টাকা ফেরত আনছে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, মালয়েশিয়া, নরওয়েতেও এমন ব্যবস্থা আছে। তাহলে আমাদের ক্ষেত্রে দোষ হবে কেন?