দেশের অর্থনীতি কিভাবে বাঁচবে:পরামর্শ ফরাসউদ্দিনের

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ রাত ০৮:২১, বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০২২, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯

ফরাসউদ্দিন বলেন, বাস্তবতার নিরিখে যারা কথা বলবে, প্রধানমন্ত্রীকে তাদের কথাগুলো শুনতে হবে, তোষামোদকারীরা প্রকৃত সত্যটা বলে না।

কমছে রপ্তানী আয়, বাড়ছে আমদানী ব্যয়, এতে চাপ বাড়ছে রিজার্ভে। এ অবস্থায় আসন্ন বাজেট কেমন হওয়া উচিৎ সে বিষয়ে পরামর্শ দিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও এককালে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিবের দায়িত্ব পালনকারী মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।

ফরাসউদ্দিন বলেন, কর খেলাপি, ঋণ খেলাপি, মানি লন্ডারিং এই তিনটা জিনিস বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় বাধা। প্রধানমন্ত্রীকে এই বাঁধা ডিঙ্গাতে হবে। তাই আসন্ন বাজেটে কর আহরণ বাড়াতে হবে এবং ঋণ খেলাপি ও অর্থপাচারে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে।

ফরাসউদ্দিন বলেন, বাস্তবতার নিরিখে যারা কথা বলবে, প্রধানমন্ত্রীকে তাদের কথাগুলো শুনতে হবে, তোষামোদকারীরা প্রকৃত সত্যটা বলে না।

আয়কর আইন অনুযায়ী ব্যক্তির ৩ লাখ টাকার বেশি বার্ষিক আয় হলে কর দিতে হয়। এই দেশে আড়াই কোটি মানুষের আয় কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা। কিন্তু তারা কর দেয় না। গ্রামে গঞ্জে এখন ২০ লাখ, ২৫ লাখ এবং ১ কোটি টাকা আয় করে এমন মানুষ অনেক আছে কিন্তু তারা কেউ করের আওতায় নাই। এটা বিশ্বের যে কোনও দেশের তুলনায় কম। তাই তাদেরকে করের আওতায় আনতে হবে।

করদাতা ২৫ লাখ থেকে যদি আগামী ৫ বছরে এক কোটিতে  নেয়া যায়,তাহলে কর জিডিপি রেশিও ১৯ হয়ে যাবে, যেটা নেপালের আছে। এতে ইনভেস্টমেন্ট জিডিপি বাড়াবে।

বহু লোক দেশের বাইরে যাচ্ছেন ঈদের সময়, পূজার সময় এবং সরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদরা কাড়ি কাড়ি ডলার নিয়ে যাচ্ছেন এবং মানি লন্ডারিং করছেন। এটি নজরে আনতে হবে।

বাংলাদেশে সঠিক দামে জমি নিবন্ধনের সুযোগ না থাকায় সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। ১০০ টাকার জমি রেজিস্ট্রেশন ২০ টাকার বেশি করা যায় না, সরকারই করে রেখেছে এই নিয়ম। এইখানকার বিশাল দুর্নীতি সরকার চাইলেই রোধ করতে পারে।

রেমিটেন্সের উপর যে অড়াই শতাংশ প্রণোদনা সেটার বেনিফিটটা পাচ্ছে মানি লন্ডাররা। তারা যদি ওই সুবিধাটা পায়, তাহলে অবশ্যই ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাবে অসৎ পথে যেতে হবে না। এজন্য ৫ শতাংশ টাকা ডেপ্রিসিয়েশন করতে হবে।

ডলারের দাম ৫ শতাংশ বাড়ানোর মাধ্যমে দেশকে স্বনির্ভর করা যাবে। গত ১০ বছরে ভারত ডলারের বিপরীতে রুপির মান কমিয়েছে ৭০ শতাংশ, পকিস্তান কমিয়েছে ৪৩ শতাংশ। দেশে কমেছে মাত্র ২২ শতাংশ।

ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমানোর ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “ যদি ৫ শতাংশ ডেপ্রিসিয়েশন করি তাহলে….আমদানি খরচ অনেক বেড়ে যাবে। এখন সেটাই দরকার।

ডলারের দাম বাড়ানোর পাশাপাশি আমদানি করা পণ্যের দামও বাড়িয়ে দিতে হবে। দেশে যেসব পণ্য তৈরি হয় সেসব যাতে আমদানি না হয় সেজন্য বড় ধরনের কর বসিয়ে দিতে হবে।এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

যেসব জিনিস দেশে তৈরি হয় যেমন- নির্মাণ সামগ্রী, ফার্নিচার, গুঁড়া দুধ, সাইকেল, মোটরসাইকেল, গাড়ি এগুলো দেশেরটাই কিনতে হবে। এগুলোর আমদানি কঠিন করে, ট্যাক্স বাড়িয়ে দিতে হবে।

গাড়ির আমদানি নিরুৎসাহিত করতে হবে “বাংলাদেশে গাড়ির ওপরে কাস্টমস ডিউটি অনেক দেশের তুলনায় কম, এজন্য দেশে গাড়ি আসছেই। রাস্তা ভরেই যাচ্ছে। জায়গা পাওয় যাচ্ছে না। এগুলো তলিয়ে দেখতে হবে।

কৃষিকে বাঁচাতে ও মানুষকে কম দামে খাদ্য দিতে সমবায়ের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

বাংলাদেশে ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে তিন কোটি লোক দারিদ্র্য সীমার নিচে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ৯৮ সালে বন্যার সময় যেভাবে ভিজিএফ কার্ড দিয়ে দেড় কোটি মানুষকে নয় মাস খাওয়ানো হয়েছিল। এখনও সেটা করা সম্ভব। তখন মাত্র ২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ দিয়ে এত সমস্ত করা হয়েছে। তখন যদি এটা করা যায় এখন করতে না পারার কোনো কারণ নেই।”

Share This Article


আইএমএফের ঋণ: তৃতীয় কিস্তির জন্য ৯ শর্ত পূরণ বাংলাদেশের!

আইএমএফের ঋণের বাকি অর্থ ছাড়ে বাধা নেই: গভর্নর

রেমিট্যান্সে শীর্ষে ঢাকা, তারপর চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা

‘অভিজ্ঞতার আলোকে ব্যাংক একীভূতকরণে নতুন প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে’

প্রবাসী আয়ের শীর্ষে ঢাকা, এরপর চট্টগ্রাম সিলেট কুমিল্লা 

ব্রাজিলে তৈরি পোশাকের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার চেয়েছে বাংলাদেশ

কোরবানিতে ব্রাজিল থেকে গরু পাঠানোর অনুরোধ বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর

দক্ষিণ আমেরিকায় বাংলাদেশি পণ্যের বাজার বাড়াতে সাহায্য করবে ব্রাজিল

এবার একীভূত হচ্ছে সিটি ব্যাংকের সঙ্গে বেসিক ব্যাংক

ঈদের আগে আরেক দফা বাড়লো সোনার দাম

বৃদ্ধির পথে রিজার্ভ: বাড়ল ৫১ কোটি ডলার!

ঈদ ঘিরে জমজমাট ভৈরবের জুতাশিল্প, ২০০ কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা