একনেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার ৯ প্রকল্পের অনুমোদন

প্রায় ২ হাজার ৬৬৫ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ের ৯টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। বুধবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী এবং একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন।
করোনাভাইরাস মহামারি কারণে দুই বছরের বেশি সময় পর একনেক সভায় স্বশরীরে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। মহামারি শুরু হওয়ার থেকে এতদিন একনেক সভায় ভার্চুয়ালি অংশ গ্রহণ করেন তিনি।
সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নে দেশের ভেতরে-বাইরে অনেক চাপ ছিল। জনগণ পাশে ছিল ও তাদের আশীর্বাদ ছিল বলেই পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু প্রকল্প শেষ পযর্ন্ত বাস্তবায়ন হয়ে গেলো। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে নানা বিষয় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জনগণ পাশে ছিল, জনগণের আশীর্বাদ ছিল বলেই পদ্মা সেতু।” দেশের ভেতরে বাইরে অনেক প্রতিকূলতা ছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কাজটা করতে পেরেছি। এটা নিয়ে আনন্দে আপ্লুত ছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর অনেক বড় অর্জনগুলোর পদ্মা সেতু অন্যতম।’
তিনি বলেন, বিদ্যুৎবিল বাকি থাকলে তা সবাইকে পরিশোধ করতে হবে। পাওনা না দিলে বিদ্যুৎ লাইন কেটে দিতে হবে। বিদ্যুৎবিল সরকারি-বেসরকারি সবাইকে দিতে হবে। সবাইকে অবশ্যই বিল পরিশোধ করতে হবে।’
প্রতিটি স্থলবন্দর আপগ্রেড করতে হবে। স্থলবন্দরগুলোতে আধুনিক স্থাপনা ও সিস্টেম বসাতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। গ্রামীণ সড়কের টেকসই উন্নয়নে নানা দিকে নজর দিতে হবে। নতুন সড়ক নির্মাণ প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’
একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলো হচ্ছে- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প। একটি হলো “রূপকল্প ২০৪১: দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্র সঞ্চয় যোজন” প্রকল্প; এবং অন্যটি “রংপুর জেলাধীন পীরগঞ্জ, হারাগাছ ও বদরগঞ্জ পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন” প্রকল্প; ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের “দারুল আরকাম ইবতেদায়ি মাদ্রাসা স্থাপন ও পরিচালনা” প্রকল্প; রেলপথ মন্ত্রণালয়ের “বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জন্য ৫০টি বিজি এবং ৫০টি এমজি যাত্রীবাহী ক্যারেজ পুনর্বাসন” প্রকল্প; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের “ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ (১ম সংশোধিত)” প্রকল্প; প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের “বানৌজা শের-ই-বাংলা পটুয়াখালী স্থাপন (১ম সংশোধিত)” প্রকল্প; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের “রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে নেসকো’র আওতাধীন এলাকায় স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপন” প্রকল্প; নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের “দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (এসএএসইসি) সমন্বিত বাণিজ্য সুবিধা সেক্টর উন্নয়ন প্রকল্প: বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ (বিএলপিএ) অংশ” প্রকল্প; এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের “দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (এসএএসইসি)সমন্বিত বাণিজ্য সুবিধা সেক্টর উন্নয়ন প্রকল্প: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অংশ” প্রকল্প।
সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান; সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের; কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক; তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম; শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন; স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক; মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম; পরিবেশ, বন ও জলবায়ুমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা অংশগ্রহণ করেন।