বিরোধীদল: কার দখলে রাজপথ

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ দুপুর ০২:২৪, সোমবার, ৩০ মে, ২০২২, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯

সরফরাজ আহমেদ: সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতি অনুযায়ী সরকার ও বিরোধী দলের শক্তিমত্তা প্রতিষ্ঠিত করার স্থান হলো জাতীয় সংসদ। কোনো রাজনৈতিক দলের সরকার গঠন বা  বিরোধী দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন প্রাপ্তি নিশ্চিত করা আবশ্যক।

 

বাংলাদেশ  আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করলে প্রধান বিরোধীদল হিসেবে আবির্ভুত হয় জাতীয় পার্টি।তবে সংসদীয় আসনের ভিত্তিতে প্রধান বিরোধী দল হলেও রাজপথে সেই ভূমিকার সাক্ষর নেই জাতীয় পার্টির।

অন্যদিকে রাজপথের বিরোধীদল হিসেবে বিএনপিকে ধরা হলেও বিএনপির দখলেও নেই রাজপথ।কেননা আন্দোলনে অনীহা প্রশাসনিক বাধায় ভীতি,নেতৃত্ব সংকট ও অন্তর্দ্বন্দ্বসহ নানান জটিলতায় রাজপথে দীর্ঘদিন যাবৎ বিএনপির অনুপস্থিতি লক্ষণীয়।তবে রাজপথ খালি থাকেনি খুব বেশি সময়।

নানান সময়ে বিভিন্ন ধর্মীয় এবং কোটা সংস্কার বা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মত সামাজিক ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনে রাজপথ ছিল জমজমাট।আর এর মাঝেই ধর্মীয় ইস্যুতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের উপর ভর করে একদিকে গড়ে ওঠে হেফাজতের মতো ধর্মভিত্তিক অরাজনৈতিক দল অন্যদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পথ ধরে ডাকসুর সাবেক ভিপি নূর ও তার অনুসারীদের নেতৃত্বে  গড়ে ওঠে প্রথমে ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং তারই ধারাবাহিকতায় গণঅধিকার পরিষদ।

তারপর দীর্ঘদিন যাবৎ বিএনপিবিহীন রাজপথ  চলে যায় একদিকে হেফাজতসহ ইসলামী দলগুলো ও অন্যদিকে নূর ও তার সমর্থক গোষ্ঠীর হাতে।তবে মাঝে মাঝে বিএনপি সেই চেষ্টা করলেও জামায়াতের সাথে দুরত্ব সৃষ্টি হওয়ায় তা সফল হয়নি, কেন না জামায়াত বিহীন বিএনপি রাজপথ বা জনসভা কোনোটিতেই আজ পর্যন্ত তেমন সফলতা দেখাতে পারেনি।

বরঞ্চ বলা যায় বিএনপিকে ছাড়া এককভাবে জামায়াতই হঠাৎ হঠাৎ সফলভাবে রাজপথে তাদের শক্তির জানান দিতে পেরেছে।আর বিএনপি থেকেছে সেই প্রেস ক্লাব ও তাদের পল্টন অফিসের দোরগোড়াতেই।

রাজপথে জাতীয় পার্টির  উপস্থিতি অতীতের মত নেই এখনও।এর কারণ অঞ্চলিকতা নির্ভর দল হওয়া। জাতীয় পার্টির মূল সমর্থন ও শক্তি মূলত উত্তরবঙ্গ কেন্দ্রীক। সংসদে তাদের অধিকাংশ আসনই থাকে উত্তরাঞ্চলের।

তবে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসাইন মুহম্মদ এরশাদের হাতে এককভাবে দলটির নেতৃত্ব থাকাকালীন অনিয়মিতভাবে হলেই বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনে রাজপথে তাদের উপস্থিতি দেখা যেত যা নিকট অতীতে দেখা যায়নি বললেই চলে। বর্তমানে সংসদের বিরোধীদলে তাদের উপিস্থিতি থাকলেও রাজপথে নেই মোটেই।

অন্যদিকে জোনায়েদ সাকির গণসংহতি আন্দোলনসহ মাঝে মাঝে বাম ধারার দুয়েকটি দল রাজপথে ঝটিকা সফর করলেও অধিকাংশ বাম দলগুলো যেন রাজপথ ভুলেই গেছে। 

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাম নেতা বলেন, 'বাম রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবখানা যেন এমন যে সরকারবিরোধী কোনো ইস্যু না থাকলে রাজপথে নামার দরকার নেই,অথচ অতীতে বাম রাজনৈতিক দলগুলো আদর্শের জন্যই যুদ্ধ করেছে,রাজপথ কাপিয়েছে,শুধু সরকার পরিবর্তন বা তাদের বিরিধিতার জন্য নয়।'

Share This Article