অবকাঠামোর মাধ্যমে অর্থনীতির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে বাংলাদেশ!

  বাংলাদেশের কথা ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:৪৮, বুধবার, ২৫ মে, ২০২২, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯

দেশের মেগা প্রজেক্টগুলোতে শুধু খরচই হয় না, সেখান থেকে যথেষ্ট আয়ও হয়। এসব বৃহৎ অবকাঠামো নগদ আয় ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সুবিধা সৃষ্টি করে, যা বিভিন্ন মাত্রায় জিডিপিতে অবদান রাখে।  

যেমন পদ্মা সেতুর জন্য জিডিপির ১.২%  বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ জিডিপি যদি ৪০০ বিলিয়ন হয় তবে এর ১.২% হিসাবে $৪.৮ বিলিয়ন বা ৪০,৮০০ কোটি টাকার বেনিফিট আসবে প্রতিবছর।

বাড়তি সুবিধার মধ্যে বিনিয়োগ বাড়বে, কাঁচামালের সরবরাহ ব্যাবস্থা শক্ত হবে, পচনশীল দ্রব্যের ক্ষতি কমবে, সেই সাথে মানুষের কর্মঘন্টা বেঁচে যাবে।

পায়রা সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলে বিশাল অর্থনৈতিক বুস্ট করা সম্ভব। কমপক্ষে এই অঞ্চলের জিডিপিতে এর প্রভার ১ শতাংশ হবে। সেই হিসাবে এখান থেকে আমরা ৫/৬ হাজার কোটি টাকার বাড়তি আয় পেতে পারি। সেই সাথে বাড়তি বেনিফিট হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলকে পর্যটনবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

এছাড়া আছে বাংলাদেশের সব থেকে দীর্ঘ রুপসা রেল সেতু এবং খুলনা  মংলা রেল প্রজেক্টের মাধ্যমে খুলনার সাথে মংলার রেল সংযোগ স্থাপন। ফলে এই অঞ্চলের শিল্পাঞ্চলগুলি নতুন করে জেগে উঠবে। পণ্য বহন খরচ কমে আসবে। এখান থেকেও হাজার কোটি টাকার বেনিফিট নেয়া সম্ভব।

দক্ষিণাঞ্চলে গোমা সেতুর মত অনেকগুলো সেতুর কাজ এখন চলমান। এগুলা হয়ে গেলে আঞ্চলিক অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। সাপ্লাই চেইন শক্ত হবে। এছাড়া চলমান ৬ লেনের কালনা সেতু হয়ে গেলে যশোর, বেনাপোল, নড়াইল, নোয়াপাড়া বন্দরের সাথে ঢাকার দুরত্ব অনেক কমে যাবে। গতি পাবে অর্থনীতি।

এছাড়া কর্ণফুলী টানেলের কাজও এক বছরের মধ্যে শেষ হয়ে আসবে। কক্সবাজারে সরাসরি রেল যাত্রাও এক বা দুই বছরের মধ্যে সম্ভব হবে, যা এই অঞ্চলের অর্থনীতি ও সামগ্রিক বিনিয়োগ উপযোগীতা অনেক বৃদ্ধি করবে।

ঢাকা রংপুর চার লেনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। সেতুর ও অন্যান্য প্রকল্পের হিসাবে এরকম আরো প্রচুর প্রজেক্ট আছে, যা দু'এক বছরের মধ্যে অবদান রাখতে শুরু করবে।

এবার আসি ইকনোমিক জোনে।বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ২০% এর বেশি আসে ইপিজেড থেকে। আর ইকোনমিক জোন হচ্ছে ইপিজেড থেকেও বৃহৎ আকারে ভারিশিল্পের আধার। মিরসরাই ইকনোমিক জোনে ইতোমধ্যে ১৭ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ কমিটমেন্ট এসেছে। কিছু কারখানা উৎপাদনেও গিয়েছে। সব থেকে গুরুত্বপূর্ন যেটা সেটা হল বিদ্যুৎ খাত।

এখানে করোনা পরিস্থিতি এবং বর্তমান ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ শেষ হবার পর সব থেকে বড় যে চ্যালেঞ্জটি আমরা ফেইস করব সেটা হল প্রতিযোগিতা।

অনেক শক্ত অর্থনীতি শক্তি হারাতে পারে। এরুপ ক্ষেত্রে ভঙ্গুর অর্থনীতিকে পূনর্গঠন করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হবে। আর এক্ষেত্রে আমরা যদি ভারত বা ভিয়েতনাম থেকে পিছয়ে পড়ি তবে আমাদের বাজার হাতছাড়া হয়ে তাদের কাছে চলে যাবে। তাই সর্বোত্তম উপায় হবে ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট গুলিতে প্রয়োজনে তিন শিফটে কাজ করিয়ে হলেও যেই কাজ দুই বছরে শেষ হবার কথা সেটা এক বা দেড় বছরে শেষ করা। এতে রিটার্ন দ্রুত পাওয়া যাবে। ফলে ভঙ্গুর অর্থনীতি দ্রুত সারিয়ে তোলা সম্ভব হবে।ইকনোমিতে যদি এই অতিরিক্ত বেনিফিট আমরা এক বছর এগিয়ে আনতে পারি তবে অতিরিক্ত লক্ষ কোটি টাকার সুবিধা পাওয়া সম্ভব হবে। আমাদের সক্ষমতা আমরা ধরে রাখতে পারবো।

বিষয়ঃ গবেষণা

Share This Article