উগ্রবাদ প্রচারের জন্য পাকিস্তানের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা

উগ্রপন্থার প্রচার ও কট্টর মৌলবাদীদের ব্যবহারের জন্য পাকিস্তানের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক ও বিশেষজ্ঞরা। পাকিস্তানের এসব কর্মকাণ্ড আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ। দিল্লিতে আইআইএম রোহতক আয়োজিত ‘র্যাডিক্যালাইজেশন : থ্রেটস টু দি আর্কিটেকচার অব গ্লোবাল স্ট্যাবিলিটি’ শীর্ষক দুই দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তারা এ কথা বলেন।
সম্মেলনে ২৫টিরও বেশি দেশের বক্তা ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ভারতে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত ফরিদ মামুন্দজে বলেন, আফগান মাটি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর পাকিস্তান সেনাবাহিনী মার্কিন বাহিনীর রেখে যাওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করেছে। বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ শত শত সামরিক যানবাহন শিয়ালকোট এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাবের অন্যান্য স্থানে নিয়ে গেছে, যেখানে তাদের নিজস্ব সামরিক সরঞ্জাম তৈরি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, গত দুই দশকে আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে ভারত যে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে, তাতে ভারতকে আফগানিস্তান সম্পর্কিত ইস্যুতে গঠিত ট্রোইকার অংশ করা উচিত। এ ছাড়া আফগানিস্তান সংকট মোকাবেলার জন্য ভারতকে যেকোন আন্তর্জাতিক সংস্থার আলোচনার অংশ হওয়া উচিত।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে ভারতের অবস্থান আফগানিস্তানের জন্যও উপকার হবে বলে জানান ফরিদ মামুন্দজে। নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের উপস্থিতি অব্যাহত রাখতে হবে বলে মতামত দেন তিনি। তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অন্তর্বর্তীকালীন তালেবান সরকারের উপর অবশ্যই চাপ প্রয়োগ করতে হবে যাতে স্পষ্টভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নারীদের অবস্থার উন্নতি করা যায়।
সম্মেলনে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু ভারত ও পাকিস্তানের বৈদেশিক নীতির তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে ভারত যখন আফগানিস্তানে স্কুল ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে, তখন পাকিস্তান ৩০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করেছে। এ ছাড়া ২ লাখ নারীর শ্লীলতাহানি করেছে।
দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক ধীরজ শর্মা বলেন, ‘এটা স্পষ্ট হয়েছে, উগ্রপন্থা বা মৌলবাদ কিছু গোষ্ঠীর জন্য ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। তারা নিজস্ব প্রচারণার জন্য ধর্মকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করছে। যে গোষ্ঠীগুলো মৌলবাদের ব্যবসার প্রচার করেছে তারা এর নেতিবাচক বাহ্যিক দিকগুলো বিবেচনায় নেয়নি। এর ফলে সমগ্র জাতিকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই মৌলবাদের নেতিবাচক দিক সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে এ ধরনের সম্মেলন অবদান রাখতে পারে। দেশগুলোর জন্য মৌলবাদের ঝুঁকি কমানোর অন্যতম উপায় হলো সুশাসন এবং সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি আস্থা তৈরি করা।’
সূত্র : এনএনআই