কেন বাংলাদেশের ব্যাপারে আগ্রহ বাড়ছে তুরস্কের? (ভিডিও)
স্টাফ রিপোর্টার:
আগামীতে সন্ত্রাস দমন, নিরাপত্তা ও মাদক পাচার রোধে বাংলাদেশ-তুরস্ক একসাথে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। ৮ জানুয়ারি দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিয়ে একটি সমঝোতা চুক্তিও সই করেছে।
এর অধীনে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার, কোস্টগার্ডসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেবে তুরস্ক। সেই সাথে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে দুই দেশ পরস্পরের সাথে তথ্য বিনিময় করবে।
অন্যদিকে ন্যাটোর অংশীদার তুরস্ক মুসলিম বিশ্বে নিজের অবস্থান শক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করছে,যেখানে মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ। দ্বি-পাক্ষিক এই চাহিদাই দুই দেশকে আরো কাছে টেনে আনছে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতিতে এক ধরণের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। কোন একটি দেশ বা ব্লকের ওপর নির্ভর না থেকে একাধিক ব্লকের সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশ। যেমন চীন-ভারত, চীন-যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাষ্ট্র-তুরস্ক বিভিন্ন ব্লকে বিভক্ত হলেও বাংলাদেশ প্রয়োজন অনুযায়ী সব ব্লকের সঙ্গেই সম্পর্ক রেখে চলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে যেমন সামরিক সহযোগিতার চুক্তি আছে ,তেমনি তুরস্ক থেকে বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কিনছে এবং প্রশিক্ষণও নিচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি ও আঞ্চলিক নানা ইস্যুতে বাংলাদেশ এমন একটি অবস্থান নিতে পেরেছে, যেটি তুরস্কের আগ্রহের অন্যতম আরেকটি কারণ।
উল্লেখ্য ২০১২ সালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর করা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্কে এক ধরণের টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছিল। সেসময় ঢাকায় নিযুক্ত তুর্কী রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নিয়েছিল দেশটি।
তবে ২০১৬ সালে তুরস্ক-বাংলাদেশের সম্পর্ক নাটকীয়ভাবে বদলে যেতে শুরু করে। সেসময় দেশটিতে সংঘটিত একটি ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের সরকার তার নিন্দা জানিয়ে একটি বার্তা পাঠায়। তারপরই বরফ গলতে শুরু করে তুরস্ক সরকারের।
এরপর ২০২০ সালে আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাস ভবন উদ্বোধন করা হয়। রোহিঙ্গা ইস্যুতেও বাংলাদেশের সমর্থনে এগিয়ে আসে। এরপর ২০২১ সালে তুরস্কের কাছ থেকে সমরাস্ত্র কেনার জন্য একটি চুক্তি করে বাংলাদেশ।
বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে আঙ্কারায় একটি পার্কের নামকরণ করা হয়েছে। সবশেষ গত ৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ সফরে এসে তুর্কী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোলেমান সয়লু বাংলাদেশের সাথে সমঝোতা স্মারক চুক্তি করে যান।